নেতা-মন্ত্রীর আচরণে রাশ টানতে পদক্ষেপ তৃণমূল কংগ্রেসের। এবার থেকে দলের অপছন্দ কোনও কথা বা কাজ করলে দল ওই নেতা বা নেত্রীকে শোকজ করবে। যদি কেউ তিনবার কেউ শোকজ-এর মুখোমুখি হন তবে দল ওই নেতা বা নেত্রীকে সাসপেন্ড করবে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জির কালীঘাটের বাড়িতে তৃণমূলের জাতীয় কর্ম সমিতির এক বৈঠকে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তাৎপর্যর্য়পূর্ণভাবে এদিন ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পর দলনেত্রী নয়, সাংবাদিক বৈঠক করেছেন দলের নেত্রী, রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘যদি দলের কোনও সদস্য বা সদস্যাকে শোকজ করা হয় তবে তিনি তার উত্তর দিতে বাধ্য থাকবেন। পরপর তিনবার এই শোকজ হলে ওই সদস্য বা সদস্যাকে সাসপেন্ড করা হবে।’ অর্থাৎ ভুল করলে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হবে ঠিকই, কিন্তু যা খুশি মনোভাব আর বরদাস্ত করা হবে না।
এদিনের বৈঠক থেকে সংসদ, বিধানসভা এবং দলের অভ্যন্তরের জন্যও পৃথক পৃথক কমিটি গড়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। এবং কে কোন বিষয়ে বলবেন, তাও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। চন্দ্রিমা তিনি জানিয়েছেন, শৃঙ্খলারক্ষায় তিনটি আলাদা কমিটি তৈরি করা হল।
সংসদীয় শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সদস্য সংখ্যা ৫। তাঁরা হলেন –
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
ডেরেক ও ব্রায়েন
কাকলি ঘোষ দস্তিদার
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
নাদিমুল হক
বিধানসভায় শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির ৬ সদস্য –
শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়
নির্মল ঘোষ
অরূপ বিশ্বাস
ফিরহাদ হাকিম
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য
দেবাশিস কুমার
দলীয় শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির ৫ সদস্য –
সুব্রত বক্সি
অরূপ বিশ্বাস
ফিরহাদ হাকিম
সুজিত বসু
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য
হঠাৎ শাস্তির সিদ্ধান্ত কেন?
এই মুহুর্তে দল কার্যত মহীরূহে পরিণত। বহু জায়গায় বিরোধীরা নেই বললেই চলে। উল্টে দলের মধ্যেই তৈরি হচ্ছে একাধিক গোষ্ঠী। এমন অবস্থায় মানুষের মধ্যে দল সম্পর্কে যাতে ভুল বার্তা না পৌঁছয় তাই সময় থাকতে দলের শৃঙ্খলায় জোর দিতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর বৈঠকে দলনেত্রী স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, দলের ঊর্ধ্বে কেউ নন। তাই দলে থাকতে হবে আরও বেশি করে মানুষের পাশে থাকতে হবে। কথা বলার ক্ষেত্রেও সর্তক থাকতে হবে। পদে থেকে কেউ এমন কিছু যেন না বলেন যাতে দল সম্পর্কে মানুষের মধ্যে ভুল বার্তা যায়। আর তেমনটা যিনি করবেন তাঁকে পড়তে হবে কঠোর শাস্তির মুখে।