বৃহস্পতিবার দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের। সূত্রের খবর, শেষ মুহূর্তে সেই সফর বাতিল করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ২৭ জুলাই নীতি আয়োগের বৈঠক রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ওই বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল মমতার। একই সঙ্গে দলের সাংসদদের সঙ্গেও বৈঠক করার কথা ছিল তৃৃণমূল নেত্রীর। বৃহস্পতিবারের সফর বাতিল হওয়ায় শনিবার নীতি আয়োগের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদৌ উপস্থিত থাকবেন কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। আগামী ২৭ জুলাই দিল্লিতে নীতি আয়োগের গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠক। তাতে পৌরোহিত্য করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর তাতে অংশ নেওয়ার কথা। যাওয়ার কথা এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। তার আগে দলের সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকেরও কর্মসূচি ছিল শুক্রবার। দিল্লিতে একটি মিট দ্য প্রেস কর্মসূচিও ছিল তাঁর। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী শেষ মুহূর্তে সফর পিছিয়ে দিলেন।
কেন মমতা তাঁর দিল্লি সফর পিছিয়ে দিলেন বা বাতিল করলেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। অনেকের বক্তব্য, এই সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর দেখা হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সেই সাক্ষাৎ হচ্ছে না বলেই মমতা দিল্লি যাওয়া পিছিয়ে দিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, তেমন হলে মমতা শুক্রবারেও দিল্লি যেতে পারেন। কারণ, দিল্লিতে তাঁর অনেকগুলি কর্মসূচি ঠিক করা আছে। তার মধ্যে একটি হল দলের সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক। দিল্লিতে জাতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও ঘরোয়া ভাবে মিলিত হওয়ার কথা ছিল বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর। সেটি হওয়ার কথা ছিল শুক্রবার। তা ছাড়াও দিল্লিতে বিরোধী শিবিরের কয়েক জন নেতা-নেত্রীর সঙ্গেও তাঁর দেখা করার কর্মসূচি ছিল।
তার পরে শনিবার ছিল নীতি আয়োগের বৈঠক। সেই বৈঠকের জন্য মমতা নথিপত্র নিয়ে তৈরিও হয়েছিলেন। কিছু নথিপত্র আগে নীতি আয়োগকে পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছিল। অনেকে অবশ্য বলছিলেন, মমতা নীতি আয়োগে বক্তৃতা না-ও করতে পারেন। তিনি শুধু নথিপত্র পেশ করতে পারেন। ওই বৈঠক হওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রীর মোদীর নেতৃত্বেই।
কিন্তু নীতি আয়োগের ওই বৈঠক নিয়েও বিরোধী শিবিরে খানিক ‘বিতর্ক’ তৈরি হয়েছে। কারণ, কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রীরা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা ওই বৈঠক বয়কট করছেন। বৈঠকে যোগ দিতে আসবেন না তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনও। আসবেন না ঝাড়খণ্ড এবং পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীরাও। এই পরিস্থিতিতে মমতার বৈঠকে যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে জল্পনা এবং আলোচনা তৈরি হচ্ছিল। বস্তুত, কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রীদের বয়কটের পাশাপাশি মমতা যে ওই বৈঠকে যোগ দিতে আগ্রহী, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তাঁর প্রশংসাও করেছিলেন। মনে করা হচ্ছে, সেই কারণে মমতা শেষ পর্যন্ত ওই বৈঠকে যোগ না-ও দিতে পারেন। কারণ, তাতে বিরোধী শিবিরের ‘ঐক্য’ বিনষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।