বাংলার বকেয়া পাওনা-গণ্ডার দাবি-দাওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে সম্প্রতি জানতে চেয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরে প্রধানমন্ত্রী তাঁকে বলেছিলেন, ক্যাগের রিপোর্ট পড়ে দেখার জন্য। আর এরপরই বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তুলে ধরেন ক্যাগ রিপোর্টের প্রসঙ্গ। সুকান্তর দাবি, প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকার হিসেব দেয়নি রাজ্য। আর এই নিয়ে তুমুল হইচই পড়ে যায় রাজনৈতিক মহলে। এই বিতর্কের আবহেই এবার প্রধানমন্ত্রীকে ‘স্ট্রং’ চিঠি পাঠালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে ধরনামঞ্চ থেকে মমতা নিজেই জানালেন সে কথা।
সরকারি প্রকল্প খাতে কেন্দ্র ও রাজ্য যে অর্থবরাদ্দ করে তার কতটা খরচ হল, কীভাবে খরচ হল সেই হিসাব রাখতে হয়। তাকে ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট বলে। অনেক সময়ে দেখা যায়, আগের কিস্তির টাকা খরচের হিসাব তথা ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট না পেলে পরের কিস্তির টাকা দেয় না কেন্দ্র। এদিন মুখ্যমন্ত্রীই জানিয়েছেন, সম্প্রতি ক্যাগ (কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটরস জেনারেল) যে আর্থিক রিপোর্ট পেশ করেছে তাতে বলা হয়েছে, ২০০২-০৩ আর্থিক বছর থেকে ২০২০-২১ পর্যন্ত ২ লক্ষ ২৯ হাজার কোটি টাকা খরচের কোনও ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট তারা পায়নি।
মমতা বললেন, “বলা হচ্ছে নাকি বেনিয়ম হয়েছে। টাকা খরচ করা হয়নি। আমি একটা স্ট্রং চিঠি প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছি। এখানে বসেই সই করলাম। ক্যাগ যে কথাটাই জানে না, সেটাই লিখেছে। বলছে ২০০৩ সাল থেকে। আরে ২০০৩ সালে থোড়াই আমরা ছিলাম! ২০১১-র পরে আমরা যখন এসেছি, তখনকার দায়িত্ব নেব। তা সত্ত্বেও বলি, প্রত্যেকটা ইউটিলাইজ়েশন সার্টিফিকেট গেছে। টোটাল মিথ্যা কথা। সত্য কখনও চাপা থাকে না।”
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, বাংলার বকেয়া ব্যাপারটা কতটা গুরুতর তা প্রধানমন্ত্রী বোঝার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে হস্তক্ষেপ করুন। মিথ্যা কারণ দেখিয়ে রাজ্যকে এভাবে বঞ্চিত করা যায় না। প্রসঙ্গত, সোমবার ফের দিল্লি যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। ৬ তারিখ নির্বাচন কমিশনে একটি বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি। এখন দেখার দিল্লি গিয়ে বকেয়া পাওনা নিয়ে ফের দৌত্য চালান কিনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।