হাইকোর্টে জোর ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য। ২০১০ সালের পরে তৈরি হওয়া গোটা ওবিসি তালিকা বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। যার জেরে বাতিল হতে বসেছে প্রায় ৫ লাখ ওবিসি শংসাপত্র। হাইকোর্টের এই রায় প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র আপত্তি জানালেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ খড়দহের সভা থেকে মমতা বলেন, ‘এই রায় আমি মানি না। যেমন ২৬ হাজার শিক্ষককে যখন বাতিল করা হয়েছিল, আমি বলেছিলাম ওই রায় আমরা মানি না। তেমনই আজকে বলছি, যে রায় দিয়েছেন, যেই দিয়ে থাকুন… নাম বলব না… রায় নিয়ে বলা যায়। বিজেপির রায় এটা। আমরা মানব না। ওবিসি সংরক্ষণ চলছে, চলবে।’
কলকাতা হাই কোর্ট ২০১০ সালের পর থেকে পাওয়া রাজ্যের সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট বুধবার বাতিল করে দিয়েছে। ঘটনাচক্রে, ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। ফলে আদালতের নির্দেশ মূলত কার্যকর হতে চলেছে তৃণমূল আমলে ইস্যু করা ওবিসি শংসাপত্রের উপরেই।
মমতা বলেন, “কয়েকদিন ধরে প্রধানমন্ত্রী বলে চলেছেন তফসিলিদের রিজার্ভেশন কেড়ে নেবে। এটা কখনও হতে পারে? তাহলে সংবিধান ভেঙে দিতে হয়। আজ শুনলাম কাউকে দিয়ে একটা অর্ডার করিয়েছে। যদিও তার রায় আমি মানি না। যেমন ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করেছিল। আমি বলেছিলাম ওদের রায় আমরা মানি না। তেমনই বলছে আজকে। যে-ই রায় দিয়ে থাকুন। বিজেপির রায় এটা। আমরা মানি না। ওবিসি রিজার্ভেশন চলছে, চলবে। সাহস কত বড়! কোর্টে কখনও ভাগাভাগি হয় না। দেশে কখনও ভাগাভাগি হয় না। এটা কলঙ্কিত অধ্যায়। কেউ বলতে পারে আমি হিন্দুকে বাদ দিলাম, মুসলমানকে রাখলাম। কেউ বলতে পারে হিন্দুকে রাখলাম, মুসলমানকে বাদ দিলাম। আমি করিনি। এটা উপেন বিশ্বাস করেছিলেন। উনি চেয়ারম্যান ছিলেন। বাড়ি বাড়ি সার্ভে করে হয়েছে। ২০১২ থেকে চলছে। স্পর্ধা তো কম নয়। একটা সরকারের পলিসি নিয়ে কথা বলছে। বিজেপির পলিসি নিয়ে একটা কথা বলার হিম্মত আছে? আবার বলে রাখি, এটা ক্যাবিনেট করে পাশ হয়েছে। বিধানসভায় পাশ হয়েছে। আদালতের রায় আছে।”
এর পর সন্দেশখালি কাণ্ডের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মমতা আরও বলেন, “যারা ভোটের আগে এসব নিয়ে খেলা করছে। সন্দেশখালি নিয়ে করলেন। চক্রান্ত ফাঁস হয়ে গেল। দাঙ্গা নিয়ে করলেন। সেই চক্রান্তও ফাঁস হয়ে গেল। এখনও হিন্দু-মুসলমানে ভাগ করার কথা মাথায় ঘুরছে। এটা সাংবিধানিক অধিকার। ওবিসিদের সংবিধানের কাঠামোর মধ্যে থেকে রিজার্ভেশন করা হয়েছে।”