নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানির পর সোমবার মাইলফলক রায় ঘোষণা করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। এক সঙ্গে ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন হাইকোর্টের এহেন রায় নিয়ে এবার বেনজির সমালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কলকাতা হাই কোর্টের রায়ে যে শিক্ষকেরা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার রায়গঞ্জের জনসভা থেকে তিনি জানালেন, আদালতের সোমবারের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতে যাবেন তিনি। এই রায়কে ‘বেআইনি’ বলেও দাবি করলেন তিনি। রায়গঞ্জের চাকুলিয়ায় সভা ছিল মমতার। সেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে দৃশ্যত ক্ষিপ্ত মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কী ভেবেছেন আপনারা। “আমি চাকরি দেব, আর আপনারা কলমের খোঁচায় চাকরি কেড়ে নেবেন! এটা বেআইনি নির্দেশ। আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাব”।
রায়ের প্রসঙ্গ টেনে নাম না করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও কটাক্ষ করলেন তৃণমূলনেত্রী। প্রশ্ন তুললেন, সোমবার আদালত যে রায় দিয়েছে, তা তিনি শনিবার কী ভাবে জেনেছিলেন? তবে কি তাঁরাই রায় লিখে দিয়েছেন? ‘বিজেপির বিচারালয়’ বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি।আদালত রায় ঘোষণার আগে শনিবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, সোমবার বিস্ফোরণ হবে।
বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “না মন্দির না মসজিদ না গুরুদ্বারা। এটা বিজেপির বিচারালয়। বিজেপি যেখানে বসে বিচার করে, রাজনৈতিক বিচার। “অন্য কেউ পিল (পড়ুন পিআইএল তথা জনস্বার্থ মামলা) করলে দেবে তাকে কিল, আর বিজেপি পিল করলে বেল, বাকিদের জেল। এটা আজ নয়, অনেক দিন ধরে চলছে”। মমতা আরও বলেন, “এটা বিচারপতিদের দোষ নয়। কেন্দ্রীয় সরকারের দোষ। তারা বিজেপির লোক দেখে দেখে এখানে বসিয়েছে। বিজেপি পার্টি অফিস থেকে যা বলে দেয়, সেই ড্রাফ্টটা তারা করে দেয়”।
গোটা ব্যাপারটার পিছনে যে ষড়যন্ত্র রয়েছে, তা আরও স্পষ্ট করে বোঝাতে ইঙ্গিত করতে মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, একজনকে দেখলেন না বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়িয়ে গেল! মমতার কথায়, “সুপ্রিম কোর্ট গোটা বিষয়টি সেট অ্যাসাইড করে বলেছিল, নতুন করে ডিভিশন বেঞ্চ তৈরি হোক। কিন্তু কাকে নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ গড়বে? বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে”।