গত ২৭ ডিসেম্বর ঘটা করে সাংবাদিক বৈঠক করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছিল, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই প্রাথমিকের পরীক্ষায় সেমিস্টার পদ্ধতি চালু হবে।
বৃহস্পতিবার নবান্নের বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, প্রাথমিকের বাচ্চাদের ওপর এভাবে চাপ তৈরি করা যাবে না। সেমিস্টার পদ্ধতি চালুর যে ঘোষণা করা হচ্ছে তা বাতিল করতে হবে।
নবান্ন সভাঘরে বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। এক এক করে বিভিন্ন দফতর ধরে কাজের হিসাব নিচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শিক্ষা দফতরের পালা আসতেই প্রাথমিকে পরীক্ষা ব্যবস্থা বদলের ঘোষণা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী। স্পষ্ট জানিয়ে দেন, প্রাথমিকে কোনও সিমেস্টার হবে না! কী ভাবে ওই ঘোষণা হল, কেন মুখ্যমন্ত্রীকে বা মুখ্যসচিবকে বিষয়টি জানায়নি শিক্ষা দফতর, তা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যকে সর্বসমক্ষেই ভর্ৎসনা করেন মমতা। শিক্ষামন্ত্রী প্রথমে জবাব দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘মুখ্যসচিবের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। আপনি অনুমোদন না দিলে বিজ্ঞপ্তি জারি হবে না।’’
সেই জবাব শুনে আরও ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘অনুমোদন হয়নি তো কাগজে বেরোল কী করে? যা মেসেজ (বার্তা) যাওয়ার তো চলে গেল!’’ প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর ধমক শোনার পরে ব্রাত্যকে দৃশ্যতই বিড়ম্বিত দেখিয়েছে। তবে কোনও বাক্যব্যয় না করে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়ে দেন, প্রাথমিকে সিমেস্টার পদ্ধতি চালু হবে না।
কেন তিনি সিমেস্টার পদ্ধতি চান না, তারও বিশদে ব্যাখ্যা দেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘আমি চাই ছাত্রছাত্রীদের ভার কমাতে। আর সেখানে কিনা সিমেস্টার? ওইটুকু ছেলেমেয়েরা টুইঙ্কল টুইঙ্কল লিটল স্টার শিখছে। আর তাদের বলা হচ্ছে সিমেস্টার করতে! কোনও সিমেস্টার হবে না।’’ পাশাপাশিই, মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দিয়েছেন, কোনও নীতিগত প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নিলে তাতে আগে তাঁর অনুমোদন নিতে হবে। আগে জানাতে হবে। নবান্নের আমলাদের একাংশের বক্তব্য, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দিষ্ট ভাবে শিক্ষা দফতরের উদ্দেশে এ কথা বললেও আসলে সব দফতরের ক্ষেত্রেই বিষয়টি প্রযোজ্য। অর্থাৎ, কোনও দফতরই নীতিগত প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরকে এড়িয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।