জুনিয়র চিকিৎসকদের অনুরোধে ফের বৈঠকে বসার সময় দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। আগামী সোমবার বিকেল পাঁচটায় নবান্নে জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তিনি। তবে ১০ জনের বেশি প্রতিনিধি আসতে পারবেন না। তবে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের অপসারণ যে সম্ভব নয়, তা সাফ জানান মুখ্যমন্ত্রী।
শনিবার ধর্মতলায় ডাক্তারদের অনশনমঞ্চে বেলা ২টো নাগাদ রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী ও মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ পৌঁছন। ১০ দফা দাবি আদায়ে এখনও অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা। অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তাদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। সঙ্গে ছিলেন পুলিশের ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ও। কিছুক্ষণ পরই রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের ফোন থেকে অনশনকারী ডাক্তারদের বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে প্রায় ঘণ্টাখানেক কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফোনে জুনিয়র চিকিৎসকদের কাছ থেকে দশ দফা দাবি শুনতে চান তিনি। তবে আট দফা দাবি শোনান জুনিয়ররা। দ্রুত ও স্বচ্ছ বিচার, স্বাস্থ্যসচিবের অপসারণ, রেফারেল ব্যবস্থা, ফাঁকা বেডের খতিয়ান, হাসপাতাল সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগে আপত্তি, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মতো আট দফা দাবির কথা উল্লেখ করেন আন্দোলনকারীরা। বাকি দুদফা দাবি বৈঠকের টেবিলে বলবেন বলেই জানান চিকিৎসকরা।
জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি মেটাতে রাজ্য সরকার যে তৎপর, তা বার বার বলেন মুখ্যমন্ত্রী। দ্রুত ও স্বচ্ছ বিচারের বিষয়টি যে বর্তমানে আর মুখ্যমন্ত্রীর হাতে নেই, তা জানান মুখ্যমন্ত্রী। সিভিক ভলান্টিয়ারের বদলে রাজ্য সরকারি হাসপাতালগুলিতে পুলিশ মোতায়েনের ক্ষেত্রে মূল বাধা নিয়োগ তা জানান। ওবিসি কাঁটায় নিয়োগ আটকে রয়েছে বলেই জানান মুখ্যমন্ত্রী। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে ৩-৪ মাস সময় চেয়ে নেন।
মমতা আরও জানান, প্যানিক বাটন, সিসিটিভি-সহ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থাপনার কাজ চলছে। তবে আন্দোলনকারীদের মূল দাবি স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে অপসারণ করা যে সম্ভব নয়, তা পরিষ্কার আন্দোলনকারীদের জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। অভিযোগ খতিয়ে দেখে তবেই ভবিষ্যতে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলেই আশ্বাস দেন তিনি। তবে বার বারই মমতার অনুরোধ, “অনশন প্রত্যাহার করুন।”
ওই কথোপকথনের পরে অনশনকারীরা জানিয়েছেন, তাঁরা বৈঠকে যাবেন। কিন্তু অনশন চলবে। তবে দু’টি বিষয় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমত, আন্দোলনকারীদের তরফে ১০ জনের বেশি প্রতিনিধি যেন ওই বৈঠকে না থাকেন। দুই, ওই প্রতিনিধিরা যেন বৈঠকে পৌঁছতে বিলম্ব না করেন। এখন দেখার, সোমবারের বৈঠকের পরে অনশন উঠে গিয়ে অচলাবস্থা কাটে কি না।