আকাশছোঁয়া সবজির দাম নিয়ে এবার পুলিশকে কড়া নজরদারির নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, ১০ দিনের মধ্যে সবজির দাম কমাতে হবে। এবং দাম কতটা কমল তা নিয়ে প্রতি সপ্তাহে রিপোর্ট জমা দিতে হবে তাঁর কাছে।
একদিকে উত্তরবঙ্গ ভাসছে অন্যদিকে জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহেও কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে সেই অর্থে বর্ষার এখনও দেখা মেলেনি। এদিকে বাজারে যেন আগুনের গোলা ছুটছে। লঙ্কা, বেগুন সবই ডবল সেঞ্চুরি ছুঁয়েছে। ঢ্যারশ, উচ্ছের মতো সবজিও বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৯০ থেকে ১১০। বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে মঙ্গলবার নবান্নে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি। মমতার খোঁচা, “তিন মাস ধরে ভোট হয়েছে। নির্বাচনী বন্ডের টাকা তুলতেই সব্জির দাম বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে কি না, খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।” কারা, কী উদ্দেশে দাম এতটা বাড়িয়ে দিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। কিছু লোক অতিরিক্ত লাভের আশায় দাম বাড়াচ্ছে বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর।
মমতার কথায়, “কৃষকেরা কিন্তু বাড়তি দাম পাচ্ছেন না। সবজির দাম বাড়িয়ে মুনাফা নিচ্ছেন মুনাফাখোরেরা। এই জিনিস কেন চলবে?” আলুর মূল্যবৃদ্ধি নিয়েও এদিন সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, আলুর দাম গত বছর এই সময় ছিল ২২ টাকা, কিন্তু এবারে সেটা ৩৫ টাকা। বাজারে কৃত্রিম চাহিদা তৈরির জন্য বড় ব্যবসায়ীদের একাংশ হিমঘর বা কোল্ড স্টোরেজে আলু আটকে রাখছেন।
এরপরই টাস্ক ফোর্সের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতার কথায, “টাস্ক ফোর্স গঠন করেছিলাম, তারা শেষ কবে বৈঠকে বসেছে জানি না। যত দিন দাম না কমে, তত দিন বৈঠকে বসতে হবে। আমি মুখ্যসচিব, ডিজিকে নির্দেশ দিচ্ছি। কতটা দাম কমল, তা নিয়ে প্রতি সপ্তাহে আমি রিপোর্ট চাই। ১০ দিনের মধ্যে দাম কমাতেই হবে।”
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, কোল্ড স্টোরেজে অতিরিক্ত আলু মজুত রাখা চলবে না। নাসিকের বদলে রাজ্যের চাষিদের কাছ থেকে কিনতে হবে পিঁয়াজ। রাজ্যের চাহিদা না মিটিয়ে ভিনদেশে পাঠানো যাবে না সবজি। প্রয়োজনে বর্ডারে চেকিং চলবে। বাজারে সিআইডি, পুলিশ, আইবির নজরদারির নির্দেশ। নজরদারি চালাতে গিয়ে তোলাবাজি করলে অ্যাকশন নেওয়ার হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর। ধানের মতো চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি সবজি কেনার পক্ষেও সওয়াল মমতার। প্রয়োজনে মাল্টিপারপাস কোল্ড স্টোরেজ তৈরির পরামর্শও দিলেন তিনি।