আন্দোলনকারী ডাক্তারি পড়ুয়াদের অনশন তুলে ফের কাজে ফেরার বার্তা দিল রাজ্য সরকার। সোমবার সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ দাবি করেন, সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন মেনে রাজ্য সরকার ইতিবাচকভাবে কাজ করছে। হাসপাতালে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয় রাজ্য সরকার কী কী কাজ করছেন, কাজ কতদূর এগোল তার খতিয়ানও দেন তিনি।
সোমবার, চতুর্থীর দিন ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্প নিয়ে রিভিং মিটিংয়ের পর নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জানালেন, আগামী ১০ তারিখের মধ্যে রাজ্যের সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলির ৯০ শতাংশ উন্নয়নমূলক কাজ শেষ হয়ে যাবে। সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে এবং সমাজের উন্নতিকল্পে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করার আবেদন জানালেন পন্থ। তবে কোনও মাসের উল্লেখ করেননি। তবে কাজের অগ্রগতির হার নিয়ে মুখ্য়সচিব যে তথ্য দিয়েছেন, তাতে মনে করা হচ্ছে, আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হওয়ার কথা বলেছেন।
পন্থের সংযোজন, “আমরা সবাইকে কাজে ফিরে আসতে অনুরোধ করছি। অনেকে ফিরেছেন। বাকিরাও ফিরুন। মানুষকে পরিষেবা দিন। আমরা সবাই মিলে হাসপাতালের পরিবেশের উন্নতির চেষ্টা করছি। এবং কাজ যে হচ্ছে, সেটাও দেখা যাচ্ছে।পড়ুয়াদের উচিত কাজের অগ্রগতিকে প্রশংসা করা। এবং কাজে ফেরা।”
সেই অনুযায়ী রোগীকে রেফার করা হবে। এটা জুনিয়র ডাক্তারদের অন্যতম দাবি ছিল। তাঁদের প্রায় সকল দাবিই রাজ্য় সরকার মেনে নিচ্ছে বলে দাবি মুখ্যসচিবের। তাই তাঁদেরও আন্দোলনের পথ থেকে সরে কাজে যোগ দেওয়া উচিৎ বলেই মনে করছে প্রশাসন। এদিন আরও একবার সেই অনুরোধ জানালেন মুখ্যসচিব।
রাজ্যের সব সরকারি হাসপাতালে চালু হচ্ছে নয়া রেফারেল ব্যবস্থা। জানালেন মুখ্যসচিব। এই রেফারেল ব্যবস্থা দক্ষিণ ২৪ জেলায় পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে ১৫ অক্টোবর থেকে শুরু হবে। ১ নভেম্বর থেকে শুরু হবে সারা রাজ্যে। কী এই নয়া রেফারেল ব্যবস্থা? কোন মেডিক্যাল কলেজ বা হাসপাতালে কত বেড ফাঁকা রয়েছে তা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতেই ‘রিয়াল টাইম বেসিসে’- ব্লক থেকে জেলাস্তর সমস্তক্ষেত্রে দেখা যাবে অনলাইনের মাধ্যমে।
সম্প্রতি রাজ্যের হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে ৭ সদস্যের টিম গঠন করেছে নবান্নের। অবসরপ্রাপ্ত রাজ্য পুলিশের ডিজি তথা সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর সিভিল সার্ভিস স্টাডি সেন্টারের চেয়ারম্যান সুরজিৎ করপুরকায়স্থকে মাথায় রেখে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তকারী দলে রাজ্য পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত ডিজি ছাড়াও রয়েছেন কর্নেল এন পাল সিং, জয় বিশ্বাস, তাপস মাইতি, পুষ্পা, সৌম্য ভট্টাচার্য ও খলিদ কাইজার।
রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার নির্দেশও যেমন সেখানে রয়েছে তেমনি স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য কাজের পরিবেশ তৈরির নির্দেশ-সহ একাধিক গাইডলাইনস দিয়েছে নবান্ন। সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল পরিদর্শন করে আগামী দু’মাসের মধ্যে নবান্নে রিপোর্ট জমা দেবে তদন্তকারী দল।