খাস কলকাতায় ‘চোর’ সন্দেহে গণপিটুনি। প্রাণ গেল এক যুবকের। ঘটনাটি ঘটেছে মুচিপাড়া থানা এলাকার নির্মলচন্দ্র সেন স্ট্রিটের একটি হস্টেলে। পুলিশ খবর পেয়ে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, হস্টেলে কয়েকদিন ধরে মোবাইল চুরি হচ্ছিল। সন্দেহ গিয়ে পড়ে এই যুবকের উপর। শুক্রবার তাঁকে হস্টেলের (Hostel) আশেপাশে দেখার পর আবাসিকদের একাংশ ধরে বেধড়ক মারধর (Lynching) করে বলে অভিযোগ। তাতে অচৈতন্য় হয়ে পড়ে ওই যুবক। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২০ জনকে আটক করা হয়েছে বলে খবর।
মুচিপাড়ার নির্মলচন্দ্র সেন স্ট্রিটের ‘উদয়ন’ হস্টেল। এখানে মূলত তফসিলি জাতি, উপজাতি সম্প্রদায়ের (SC-ST)ছাত্ররা থাকেন। কেউ কলেজ, কেউ বিশ্ববিদ্যালয়, কেউ আবার চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য এখানে রয়েছেন। হস্টেল সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন ধরে তাঁদের এখানে মোবাইল (Mobile) ফোন চুরি হচ্ছিল। মুচিপাড়ার নির্মলচন্দ্র সেন স্ট্রিটের ‘উদয়ন’ হস্টেল। এখানে মূলত তফসিলি জাতি, উপজাতি সম্প্রদায়ের (SC-ST)ছাত্ররা থাকেন। কেউ কলেজ, কেউ বিশ্ববিদ্যালয়, কেউ আবার চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য এখানে রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার হস্টেলের এক আবাসিকের মোবাইল ফোন চুরি যায়। ফোন চুরির অভিযোগ করা হয়েছিল থানায় বলে খবর। শুক্রবার সকালে হস্টেলের পাশে এক দোকানের মালিক ছাত্রদের জানান, ওই লোকটি এলাকায় ঘুরঘুর করছেন। বৌবাজারে ওই উদয়ন হস্টেলের উল্টোদিকে রয়েছে বিখ্যাত মিষ্টির দোকান। অভিযোগ, দোকানি বলার পরেই হস্টেলের সামনে ফুটপাথ থেকে ওই ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যান ছাত্রেরা। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ এই ঘটনা হয়। ফুটপাথ থেকে তাঁকে তুলে আনার সময়ও মারধর চলছিল বলে অভিযোগ।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বৌবাজার থানার পুলিশ। তারা হস্টেলে ঢুকতে চাইলে প্রথমে গেট খোলা হয়নি বলে অভিযোগ। তার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় মুচিপাড়া থানার পুলিশ। তাদের জন্যও দরজা খোলা হয়নি বলে অভিযোগ। মনে করা হচ্ছে, দোতলায় মারধরের পর সিঁড়ি দিয়ে ইরশাদকে নামিয়ে আনা হয়। সে সময় তাঁকে হিন্দিতে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘খুব মেরেছে (বহুত মারা)।’’ এর পর তাঁকে উদ্ধার করে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, মৃতের নাম ইরশাদ। তাঁর বয়স ৪৭ বছর। মৃতের স্ত্রী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার পরেই তদন্তে নেমেছে পুলিশ। হস্টেলে গিয়ে ২০ জনকে আটক করেছে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের পায়ে আঘাত লেগেছে। স্থানীয় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ জোগার করার চেষ্টা করছেন পুলিশ কর্মীরা।