দুই জেলের বাসিন্দা দু’জনে (Partha – Arpita)। এখন সবাই জানেন যে ওঁরা একে অপরের ‘ঘনিষ্ঠ’। কেউ নিজে মুখে স্বীকার না করলেও, সব্বাই জানেন। কিন্তু মঙ্গলবার নগর দায়রা আদালত যা দেখল তাতে ‘ঘনিষ্ঠতা’র দাবি আরও বেশি করে সিলমোহর পেল। ভার্চুয়াল শুনানির মধ্যে দুই ক্যামেরার দুই প্রান্তে থাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের মধ্যে যে নির্বাক কথোপকথন হল, তাঁকে অনেকেই ‘প্রেমালাপ’ বলে দাবি করছেন।
ঘড়ির কাঁটায় ঠিক দুপুর ২ টো বেজে ৫০ মিনিট। স্ক্রিনে দেখা গেল পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। প্রথমেই একে অপরকে দেখে মুচকি হাসলেন। ইশারায় জানতে চাইলেন ভাল আছেন কি না। দু’জনেই জানালেন তাঁরা ভাল আছেন। মিনিট চারেক বাদে পার্থ ইশারায় অর্পিতাকে জিজ্ঞেস করলেন, খেয়েছেন কিনা। পালটা একই প্রশ্ন করেন অর্পিতা। অর্পিতা ইশারায় জিজ্ঞেস করেন পার্থ শুনতে পাচ্ছেন কি না। পার্থ উত্তরে জানান, শোনা যাচ্ছে না। শুনতে পাচ্ছিলেন না অর্পিতাও। এরপরই অর্পিতার সঙ্গে মশকরা করেন পার্থ। জিভ ভেঙাতে দেখা যায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে। তা দেখে হেসে ফেলেন অর্পিতা। আবার অর্পিতার প্রশ্ন, খাওয়া হয়েছে কিনা?
কথোপকথনের মাঝে পার্থ চট্টোপাধ্যায় অর্পিতার দিকে হার্ট সাইন দেখান। এতে আবার লাজুক হাসি দেন অর্পিতা। ৩ টে বেজে ৮ মিনিট নাগাদ নিজের নীল রঙের ফতুয়া হাত দিয়ে দেখান পার্থ। তা দেখে অর্পিতা মাথা নেড়ে সম্মতি জানান। তবে কী বোঝাতে চেয়েছেন তা স্পষ্ট নয়। তাহলে কি সেটা কি অর্পিতার দেওয়া উপহার? ঘড়িতে ৩ টে বেজে ১০ মিনিট, অর্পিতা এবার ইশারায় পার্থকে জিজ্ঞেস করেন চা খাওয়া হয়েছে কিনা। ঠিক ওই সময় পার্থ বুকের বাঁদিকে আঙুল দিয়ে কিছু লেখার ইশারা করেন। ফের একে অপরকে দেখে হাসতে থাকেন।
আরও পড়ুন: Ganga Aarti: বারাণসীর ধাঁচে কলকাতায় শুরু গঙ্গা আরতি, বৃহস্পতিবার উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী
৩ টে বারো নাগাদ হঠাৎ পার্থ সামান্য সময়ের জন্য ডিসকানেক্টেড হয়ে যায়। তখন অর্পিতার চোখে মুখে দুশ্চিন্তা দেখা যায়। পার্থর কানেকশন ফিরতেই স্বস্তি পান তিনি। এরপর অর্পিতাকে চুল সামনে আনতে দেখা যায়। তা দেখে আবার মুচকি হাসি দেন পার্থ। পালটা পার্থর গোঁফের প্রশংসা করেন অর্পিতা। কিছুক্ষণের মধ্যে আবারও ডিসকানেক্টেড হয়ে যান পার্থ। ফিরে পার্থ জানান, তিনি চা খাচ্ছিলেন। এর পরেই ক্লাইম্যাক্স। অর্পিতা নিজের ঠোঁটে হাত রেখে কিছু কি চাইলেন! আর পার্থ কপট রাগ দেখিয়ে নিজের মাথার উপর হাত ঘুরিয়ে ইশারায় যেন বলেন, মাথাটা কি খারাপ হয়ে গিয়েছে?
৩.৩০ নাগাদ মানিক ভট্টাচার্য বলতে শুরু করলে প্রেমালাপ বন্ধ করে আদালতে মন দেন দুজনই। শুনানি শেষে দেখা যায়, পার্থর উদ্দেশে কিছু লিখে বোঝাতে চাইছেন অর্পিতা। প্রসঙ্গত, গ্রেপ্তারির পর পার্থ ও অর্পিতা দু’জনেই দাবি করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে বিশেষ কোনও সম্পর্ক ছিল না। তবে এদিনের কথাবার্তায় কিন্তু কার্যত সিলমোহর পড়ল তাঁদের সম্পর্কে।
আরও পড়ুন: Kashmir Files: ক্ষমতা থাকলে গোধরা ফাইলস – উন্নাও ফাইলস বানান, বিবেক অগ্নিহোত্রীকে পাল্টা কুণাল