মন্ত্রিত্ব খোয়ানো এবং দল থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পরেই মুখ খুললেন নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। শুক্রবার জোকা ইএসআই হাসপাতালে (ESI Hospital) তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সাংবাদ মাধ্যমের সামনে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “আমি ষড়যন্ত্রের শিকার”। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর এই মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে শোরগোল ফেলে দিয়েছে। কারা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে? কাদের দিকে নিশানা করলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়? কেন এতদিন তিনি মুখ খোলেননি? মন্ত্রিত্ব খুইয়ে দল থেকে সাসপেন্ড হতেই তিনি কেন মুখ খুললেন? এই সমস্ত প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।
শুক্রবার স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য তাঁকে জোকার ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গাড়ি থেকে নামিয়ে হুইলচেয়ারে করে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে মুখের মাস্ক (মুখোশ) নামিয়ে পার্থ সংক্ষিপ্ত মন্তব্য করেন, ‘‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।’’
পার্থ যে ভাবে মুখের মাস্ক নামিয়ে কথাটি বলেছেন, তাতে এটা স্পষ্ট যে, তিনি চেয়েছিলেন, যাতে উপস্থিত সকলে (সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা-সহ) তাঁর কথাটা শুনতে পান। সেই সূত্রেই বিরোধী শিবিরের একাংশের দাবি, পার্থ এর পর আর ‘রেখেঢেকে’ বা ‘আড়াল’ করে কিছু বলবেন না। অর্থাৎ, তিনি এর পর দলের আরও অন্য অনেকের নাম নিতে পারেন। বিশেষত, তিনি যখন ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব এনেই ফেলেছেন। পক্ষান্তরে, তৃণমূলের দাবি, এই দুর্নীতির ‘পাপ’ পার্থ ঘাড়ে করে এনেছেন। তাঁকেই এর ‘দায়’ বহন করতে হবে। এখন প্যাঁচে পড়ে তিনি এই তত্ত্ব দিচ্ছেন। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কথায়, ‘‘ষড়যন্ত্র হলে পাঁচ দিন পরে বলছেন কেন! ষড়যন্ত্র হলে তিনি আদালতে গিয়ে তা প্রমাণ করুন না হয়!’’
আরও পড়ুন: BGMI Banned: ব্যাটলগ্রাউন্ডস মোবাইল ইন্ডিয়াও ব্যান? প্লে স্টোর-অ্যাপ স্টোর থেকে বেপাত্তা
বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভা থেকেও অপসারিত হন পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় (Partha Chatterjee)। তিনি গ্রেফতার হওয়ার পর বৃহস্পতিবারই প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠক বসেছিল। জল্পনা ছিল পার্থর মন্ত্রিত্বের ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। তবে ওই বৈঠকের পরই পার্থকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। শিল্পবাণিজ্য-সহ তথ্য-প্রযুক্তি, পরিষদীয় এবং শিল্প পুনর্গঠন দফতর থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠকের পর ঘোষণা করেন, তদন্ত চলাকালীন পার্থ সাসপেন্ড থাকবে। অর্থাৎ, যতদিন না এই তদন্ত শেষ হবে, ততদিন পার্থ সাসপেন্ড থাকবেন। দলের মহাসচিব-সহ পাঁচটি পদ থেকেও তাঁকে সরানো হয়।
লক্ষ্যণীয়, তার পরেই পার্থ বললেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। কারও নাম নেননি তিনি। তবে তিনি এ পরে কী বলেন, কার সম্পর্কে বলেন, তা জানতে সমস্ত মহলেই কৌতূহল তৈরি হয়েছে। এখন দেখার, হাসপাতাল থেকে বেরোনোর মুখে পার্থ আরও কিছু বলেন কি না।
আরও পড়ুন: Arpita Mukherjee: গ্রেফতারির পরই উধাও অডি, মার্সিডিজ সহ চার বিলাসবহুল গাড়ি, বাড়ছে রহস্য