আত্মহত্যা নয়। খুন করা হয়েছে মেয়েকে। চিকিৎসক তথা লেখিকা প্রজ্ঞাদীপা হালদারের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় লিভ ইন পার্টনারের দিকেই আঙুল তুললেন তাঁর মা। অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।বছর সাইত্রিশের চিকিৎসক প্রজ্ঞাদীপা হালদারের মা ঝর্ণা হালদার বৃহস্পতিবার বলেন, “মেয়ের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যে ঘর থেকে দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেটি ব্রিটিশ আমলের। মাটি থেকে প্রায় ১১ ফুট উঁচু। সেখানেই ফ্যানের থেকে ঝোলানো ছিল দেহ। যা দেখে আমাদের সন্দেহের মেয়েকে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনার প্রকৃত বিচার চাই।” সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রজ্ঞাদীপা অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় সোচ্চার হয়েছেন নেটিজেনেরা।
চিকিৎসক প্রজ্ঞাদীপা হালদারের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন লিভ ইন সঙ্গী চিকিৎসক কৌশিক সর্বাধিকারী।তরুণীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে কৌশিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিজের সুইসাইড নোটেও কৌশিককে মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন প্রজ্ঞাদীপা।লেফটেন্যান্ট কর্নেল কৌশিক সেনাবাহিনীর চিকিৎসক। ব্যারাকপুরের সেনা হাসপাতালে কর্মরত। শুক্রবার সকালে ব্যারাকপুরের ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে কৌশিককে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাদীপা হালদার বারাসত ১ নম্বর ব্লকের ছোট জাগুলিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক ছিলেন। বছর চারেক আগে সেনা হাসপাতালের চিকিৎসক কৌশিক সর্বাধিকারীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাঁরা একসঙ্গে ম্যান্ডেলা হাউসে থাকতে শুরু করেন। অভিযোগ, পরে প্রজ্ঞাদীপা জানতে পারেন একাধিক মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে কৌশিকের। প্রতিবাদ করলে প্রজ্ঞাদীপার উপর শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করা হত বলেও অভিযোগ।
গত সোমবার ব্যারাকপুর সেনাছাউনির অফিসার্স কোয়ার্টার্স ‘ম্যান্ডেলা হাউস’-এর ২০ নম্বর ফ্ল্যাটের একটি ঘর থেকে ৩৭ বছরের প্রজ্ঞাদীপার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। দেহের পাশেই উদ্ধার হয়েছিল সুইসাইড নোট। ছেঁড়া পাতায় নীল কালিতে তাতে লেখা ছিল, ‘‘যে প্রহারের দাগ নিয়ে চলে গেলাম / এর শোধ কেউ নেবে। / আমার মৃত্যুর জন্য কৌশিক দায়ী।’’ প্রজ্ঞাদীপার মাসতুতো দাদা কুমারশঙ্কর দাস মঙ্গলবার পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। তার ভিত্তিতেই তদন্তে নামে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করেছিল, আত্মহত্যা করেছেন প্রজ্ঞাদীপা।