বিকিনি পরা ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করেছিলেন এক অধ্যাপিকা (Professor)। তার জেরেই চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে তাঁকে বাধ্য করল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জানা গিয়েছে, কলকাতার এক নামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (St Xavier’s University) স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার বাবা অভিযোগের ভিত্তিতেই ইংরাজি বিভাগের ওই অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হয়েছে।
এক অভিভাবক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নালিশ জানান, অধ্যাপিকা বিকিনি পরে যে সব ছবি দিয়েছেন ইনস্টাগ্রামে, সেই ছবিগুলিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ছেলে অনেক ক্ষণ ধরে দেখছিল। মায়ের চোখে পড়ে যায়। মা-বাবা দুজনেই ওই অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ জানান। ভাইরাল হওয়া ওই চিঠির বয়ান হল, ‘সম্প্রতি আমার ছেলেকে দেখলাম, অধ্যাপিকার ছবি বারবার দেখছে। ছবিতে যৌন উত্তেজনামূলক পোশাক পরে রয়েছেন অধ্যাপিকা। শিক্ষিকার অন্তর্বাস পরা ছবি ছেলে দেখছে, বাবা হিসেবে আমার কাছে ভীষণ লজ্জার এই দৃশ্য।’ ওই চিঠিতে সংশ্লিষ্ট অভিভাবক, ‘নগ্নতা ও যৌনতা ছড়ানো,’দৃশ্যদূষণ’ ইত্যাদি শব্দবন্ধগুলি ব্যবহার করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই অভিযোগ পত্রটি ভাইরাল হয়েছে।
আরও পড়ুন: Modi-Mamata: বৃহস্পতিতে দিল্লি রওনা, শুক্রে মোদীর সঙ্গে একান্ত বৈঠক মমতার
গত বছর ৭ অক্টোবর সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও অন্যান্যরা একটি মিটিং করেন। ইনস্টাগ্রামের ছবি সহ ওই চিঠিটি দেখানো হয় অধ্যাপিকাকে। এরপরেই তাঁকে চাকরিতে ইস্তফা দেওয়ার চাপ সৃষ্টি করা হতে থাকে।অধ্যাপিকা জানান, জেভিয়ার্সে যোগ দেওয়ার দু’মাস আগে সুইমস্যুট পরা ছবি ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে দিয়েছিলেন। তাই কোনওভাবেই অক্টোবরেও সেই ছবি দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ২৪ ঘণ্টা পরই ইনস্টাগ্রাম স্টোরি মুছে যায়। সেইসঙ্গে তাঁর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ‘প্রাইভেট’ করে রাখা। সেই পরিস্থিতিতে কোনওভাবেই অক্টোবরে ওই পড়ুয়া ইনস্টাগ্রামে তাঁর ছবি দেখতে পারবেন না বলে ওই সহকারী অধ্যাপক। সেই পরিস্থিতিতে অ্যাকাউন্ট হ্যাকের আশঙ্কা প্রকাশ করে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তোলেন।যদিও কলেজ কতৃপক্ষ কোনও কথাই শুনতে রাজি হননি বলে অভিযোগ ওই অধ্যাপিকার।
ওই সহকারী অধ্যাপক দাবি করেছেন, পরিস্থিতির চাপে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই চিঠি দেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে তাঁকে ইস্তফার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। ইস্তফার একদিন আগে পূর্ব যাদবপুর থানায় ৩০ বছরের ওই সহকারী অধ্যাপক অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। শেষপর্যন্ত ২৫ অক্টোবর ইস্তফা দিয়েছিলেন।
চলতি বছরের ১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনি চিঠি পাঠিয়েছিলেন তিনি। গত ২৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়, ভুয়ো অভিযোগ করা হচ্ছে।ওই অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়েছেন বলেই দাবি তাঁদের।সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘নাম ডোবানো’র জন্য তাঁর কাছে ৯৯ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণও দাবি করা হয়।
আরও পড়ুন: Partha Chatterjee: ফুলছে পা, বাড়ছে কোমর ব্যথাও, পার্থর স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত জেল কর্তৃপক্ষও