আরজি কর হাসপাতালকাণ্ডে যাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁর মোবাইল ফোন ঘেঁটে মিলেছে পর্নোগ্রাফির বহু ভিডিয়ো। এমনটাই জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে। ওই যুবকের মানসিক বিকৃতি রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ভোর ৪টে নাগাদ হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে যুবককে দেখা গিয়েছিল। ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট পর আবার তাঁকে বেরিয়ে আসতেও দেখা যায়। এই সময়ের মধ্যেই তিনি ঘটনাটি ঘটিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে এ-ও জানা গিয়েছে, অপরাধের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন যুবক। তবে তাঁর মধ্যে কোনও অপরাধবোধ দেখা যায়নি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত সঞ্জয় রায় সিভিক ভলান্টিয়ার। ওই দিন তাঁর ডিউটি ছিল আর জি কর হাসপাতালের (RG Kar Hospital) ওই বিভাগে। তবে হাসপাতালে তার যাতায়াত ছিল নিয়মিত। ঘটনার দিন সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখেই মূলত পুলিশ তাকে নাগালে পায়। জানা যাচ্ছে, ওই রাতে ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট সে ছিল চেস্ট বিভাগের সেমিনার রুমের কাছে। রাতে তরুণী ও তাঁর সঙ্গীরা সেমিনার রুমে খাওয়াদাওয়ার করেন, একসঙ্গে অলিম্পিকের (Olympic) ম্যাচও দেখেন। এর পর সঙ্গীরা চলে যান। একাই সেমিনার রুমে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন তরুণী চিকিৎসক। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ বুঝতে পেরেছে, ঘুমের মধ্যেই তাঁর উপর আক্রমণ হয়। নেপথ্যে সম্ভবত সঞ্জয়ই। যৌন হেনস্তার (Physical Harrassment)মুখে পড়ে প্রতিরোধ করেন তরুণী। তখনই তাঁর সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়।
মূলত দু’টি বিষয়ের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁকে অভিযুক্ত হিসাবে চিহ্নিত করে। এক, হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং দুই, একটি ব্লুটুথ হেডফোন। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, হাসপাতালে প্রবেশের সময়ে অভিযুক্তের কানে একটি হেডফোন ছিল। পরে তিনি যখন বেরিয়ে আসছেন, তখন হেডফোন দেখা যায়নি তাঁর কানে। পরে ওই হেডফোনেরই ছেঁড়া অংশ পাওয়া যায় আরজি করের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার হল থেকে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা, যুবকের মানসিক কোনও বিকৃতি থাকতে পারে।
পুলিশ জানতে পারে, এই ঘটনার আগে ও পরে সঞ্জয় মদ্যপান (Drink) করেছিল। তার মোবাইল বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ জানিয়েছে, তাতে ভর্তি নীল ছবি! তরুণী চিকিৎসকের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে পাওয়া গিয়েছে নৃশংসতার নানা চিহ্ন। ধর্ষণ এবং খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে এই মামলায়। রিপোর্ট অনুযায়ী, তরুণীর দু’চোখ থেকে রক্ত গড়াচ্ছিল। তাঁর হাতের আঙুল থেকে শুরু করে, পা, পেট-সহ শরীরের নানা জায়গায় ক্ষতচিহ্ন ছিল। খুনের আগে তাঁর উপর যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছিল বলে প্রমাণ মিলেছে। মৃতের পরিবারের সদস্য এবং চিকিৎসকদের সামনেই ময়নাতদন্ত করে তার প্রাথমিক রিপোর্টটি প্রস্তুত করা হয়েছে।