আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় স্পষ্ট জানান, মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের কাজে যোগ দিতে হবে। রাজ্য সরকার যাতে কোনও পদক্ষেপ না করে সেই নির্দেশও দেন তিনি। এই নির্দেশকে স্বাগত জানিয়ে এবার প্রতিক্রিয়া দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। এদিন নবান্ন থেকে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের প্রতি তাঁর বার্তা, ”আসুন না, কথা হবে, আলোচনা হবে। আমরা তো কথা বলতে প্রস্তুত।”
সোমবার নবান্ন সভাঘরে রাজ্য প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে মমতা জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আমি খুশি, যাঁরা আন্দোলন করছেন পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এটা বাংলা বলেই সম্ভব। অন্যান্য জায়গায় আন্দোলনকারীদের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমি সকলকে অনুরোধ করব কাজে যোগ দিন।’’ তার পরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যদি আপনারা (আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তার) মনে করেন কিছু বলার আছে, তবে সব সময় স্বাগত। আপনারা ৫-১০ জনের একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে আসুন, আমরা কথা বলতে পারি।”
নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্য়মন্ত্রী জুনিয়র চিকিৎসকদের উদ্দেশে বলেন, ”সেদিন স্বাস্থ্যভবনে গিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি দল যা যা দাবি করেছিলেন, তার সবটাই মেনে নেওয়া হয়েছে। আপনারা অধ্যক্ষের অপসারণ, MSVP বদল চেয়েছিলেন। তা সঙ্গে সঙ্গে করে দেওয়া হয়েছে। চারটি দাবি ছিল, সব পূরণ করেছি। তা সত্ত্বেও কেন কাজে ফিরছেন না?” তাঁর আরও বক্তব্য, “যত আন্দোলন হয়েছে অনুমতি ছাড়া। অনুমতি নেওয়া হয়নি। সুপ্রিম কোর্টও আজ ডাক্তারদের অনুরোধ করেছে কাজে যোগ দেওয়ার জন্য। আমিও আবার অনুরোধ করব, কাজে ফেরার জন্য।”
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এক মাস এক দিন হয়ে গিয়েছে, আমি অনুরোধ কবর, উৎসবে ফিরে আসুন, পুজোতে ফিরে আসুন। সিবিআইকে বলব তাড়াতাড়ি বিচারের ব্যবস্থা করুন। স্বাস্থ্য পরিষেবা চালু করার জন্য যা যা করার দরকার, তা করতে হবে। আমি এখনও চাই না কারও বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে। আমি চাই শান্তিপূর্ণ ভাবে কথা বলার মাধ্যমে সংযত মীমাংসা করতে।’’
হাসপাতালে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করার কথাও পুলিশকে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন। ‘‘পুলিশকে বলব অপরাজিতা টাস্ক ফোর্স তৈরি করতে। আমি মনে করি সব হাসপাতালেই পুলিশের যথাসম্ভব নিরাপত্তা রয়েছে। এ ছাড়াও নারায়ণকে (স্বরূপ নিগম) বলেছি ১০০ কোটি টাকা দিতে। আমি নারায়ণকে বলেছি, যেখানে যেখানে ফাঁক আছে তা পূরণ করতে। রেস্ট রুম, ওয়াশরুম করার নির্দেশ দিয়েছি। নিরাপত্তার প্রয়োজনে হাসপাতালগুলোও ব্যবস্থা করতে পারে।’’ এখন থেকে প্রতিটি হাসপাতালের ক্ষেত্রে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে অধ্যক্ষই যাতে থাকেন, সেই পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর পরামর্শ, অধ্যক্ষের সঙ্গে এক জন সিনিয়র ডাক্তার, এক জন জুনিয়র ডাক্তার, এক জন সিস্টার, স্থানীয় বিধায়ক ও স্থানীয় থানার আইসিকে সমিতিতে রাখার জন্য।