কর্মবিরতি, অনশন প্রত্যাহার হয়েছে সদ্যই। রাজপথ ছেড়ে পুরোদমে কাজে যোগ দিয়েছেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা। রবিবার বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নিশানায় আন্দোলনকারীরা। তাঁদের দাবি, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের শুরুটা ভাল হলেও, শেষটা ভাল নয়। পাশাপাশি এ-ও বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে বৈঠক করাই উচিত হয়নি জুনিয়র ডাক্তারদের। মানুষ ভাল ভাবে নেননি।’’
শুভেন্দু বলেন, “চিকিৎসকদের আলাদা ফ্রন্ট তৈরি করেছে তৃণমূল। কিছু বাম এবং অতি বাম এদের আন্দোলনকে বিপথে চালিত করছে। যেভাবে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পলকে গো ব্যাক স্লোগান দেওয়া হয়েছে, তাতে সমগ্র মানুষের আন্দোলন থেকে বিচ্যুতি ঘটেছে। অনিকেত মাহাতোরা ভুগছেন। বাম এবং অতি বামদের জন্য এই আন্দোলনের অপমৃত্যু হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “সামনে পরীক্ষা আছে বলে বৈঠকে উনি জুনিয়র ডাক্তারদের প্রছন্ন হুমকি দিয়েছেন। তার পরই দেখা গেল জুনিয়র ডাক্তারদের ভিড় পাতলা হয়ে গেল।’’ একই সঙ্গে তিনি এ-ও জানান, রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলকে (বিজেপি) আন্দোলনে সামিল না করে ভুল করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। শুভেন্দুর কথায়, ‘‘২৭ অগস্ট নবান্ন অভিযানে না গিয়ে জুনিয়র ডাক্তারেরা ভুল করেছেন।”
জুনিয়র ডাক্তারদের ‘থ্রেট কালচার’ অভিযোগ নিয়ে মমতাকে বিঁধেছেন সুকান্ত। তিনি বলেন, ‘‘থ্রেট কালচারের জন্মই দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জুনিয়র ডাক্তারেরা সেই তাঁর সঙ্গেই ‘থ্রেট কালচার’ নিয়ে আলোচনা করলেন। তা কখনই সফল হতে পারে না।’’ তাঁর দাবি, মমতার ‘গেমপ্ল্যানে’ই খেলছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের ‘চোকার্স’ বলেও কটাক্ষ করেন সুকান্ত।
প্রসঙ্গত, ‘আমরণ অনশন’ প্রত্যাহার করার পরের দিন সিপিএমের দৈনিক মুখপত্রে লেখা হয়েছিল, নবান্ন থেকে ‘কার্যত শূন্য হাতে’ই ফিরতে হয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের। তবে বিজেপি, সিপিএম আন্দোলন নিয়ে যা-ই বলুক না কেন, জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি, তাঁরা লড়াইয়ের ময়দান ছাড়েননি।
রাজনৈতিক সংস্পর্শ এড়িয়ে নিজেদের আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ‘আমরণ অনশন’ তুললেও একাধিক কর্মসূচি করছেন তাঁরা। শনিবার আরজি করে ‘গণকনভেশন’ করেন আন্দোলনকারীরা। ‘গণকনভেশন’-এর পর আরজি কর চত্বরে ‘নির্যাতিতার জন্য বিচার’-এর দাবিতে মশাল মিছিল করেন তাঁরা। তার পরই আগামী বুধবার সিজিও কমপ্লেক্স অভিযানের ডাক দেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সেই কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, ‘‘সিজিও কেন? ক্ষমতা থাকলে সুপ্রিম কোর্টের সামনে বিক্ষোভ দেখাক।’’