বৃহস্পতিবার ঘটনার রাতে ১১টা নাগাদ খাওয়াদাওয়ার পর দায়িত্ব সহকর্মীদের বুঝিয়ে দিয়ে আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসক চলে যান সেমিনার হলে। পড়াশোনা করতে করতে খানিক বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। সেই সেমিনার হলেই তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। অথচ, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চেস্ট মেডিসিনের এইচওডি অরুণাভ দত্ত চৌধুরী দাবি করছেন, সেমিনার হল আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আর এই দাবির পর নতুন করে তৈরি হল রহস্য।
চেস্ট মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডাঃ অরুণাভ দত্ত চৌধুরী বলেন, ‘সেমিনার রুমে ক্লাস হয়। ওই হলে পড়াশোনা করেন পড়ুয়ারা। ঘটনার দিনও বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ক্লাস হয়েছে। তারপর সাড়ে আটটায় দরজায় তালা দিয়ে দেওয়া হয়। চাবি থাকে ফ্লোরের সিস্টার ইনচার্জের কাছে। কিন্তু সেদিন কখন আবার কেউ সেমিনার রুম খুলেছে, কে খুলল বুঝতে পারছি না।’ তাঁর আরও সংযোজন, “পড়াশোনার জন্যই সেমিনার রুমটি ব্যবহৃত হতো। রাতে কী হয়, কেউ তালা খোলে কি না বলতে পারব না।” হাসপাতালের ভেতরের কেউ এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বলে বারবার দাবি করা হচ্ছে বিভিন্ন মহল থেকে। তবে বিষয়টি নিয়ে ডাঃ অরুণাভ দত্ত চৌধুরী বলেন, ‘আমি সিবিআই নই।’ সিবিআই তদন্তের উপরেই পুরো বিষয়টি ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।
এদিকে নার্সিং সুপার কৃষ্ণা সাহা বলেন, “সে দিন রাতে চারটি ওয়ার্ডে মোট চার জন নার্স ডিউটিতে ছিলেন। সেমিনার হলের চাবি একটি নির্দিষ্ট বাক্সে থাকে। আসলে সেটি চিকিৎসকদের ঘর। চাবি কেউ নিচ্ছেন কি না, আমরা নার্সরা তা বলতে পারব না। চিকিৎসকদের বলা থাকে, কেউ দরকারে চাবি নিলেও কাজ হয়ে গেলে আবার রেখে যাবেন। সেমিনার হলে চিকিৎসকেরা অনেকেই পড়াশোনা করেন। তাই ওই ঘরে রাতে যাতায়াত স্বাভাবিক। তবে চিকিৎসক ছাড়া অন্য কেউ চাবি নিতে পারবেন না। সেই রাতে কে চাবি নিয়েছিলেন, আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়।” ফলে সেই রাতে কে চাবি নিয়েছেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত।
এদিকে মৃতা তরুণী চিকিৎসকের সেদিনের কাজের রস্টার নিয়েও। সেদিন সকালে হাসপাতালে এসেছিলেন। তিনটে অবধি আউটডোর করেন। পরে দুটো ক্লাসও করেছিলেন। এর পর কেন তিনি নাইট ডিউটি করলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।