আর জি কর হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার বিভাগ থেকে রক্তমাখা গ্লাভস উদ্ধার হয়েছে, এই অভিযোগে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। একটা গোটা সিলড প্যাকেটের গ্লাভসে রক্ত ছিল বলে অভিযোগ করেছিলেন এক ইন্টার্ন চিকিৎসক। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বাস্থ্যসচিব। কিন্তু সেসব গ্লাভস ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার পর জানা গেল, তাতে লেগে থাকা লাল রং রক্ত নয়। মঙ্গলবার ল্যাব পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে একথা জানালেন আর জি করের প্রিন্সিপাল সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায় নিজেই।
তবে লাল রং কী ভাবে গ্লাভসে এল, তা খতিয়ে দেখতে সেগুলি ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। সপ্তর্ষি বলেন, “আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ট্রমা সেন্টারের গ্লাভসের লাল দাগ রক্তের নয়। বায়োকেমিস্ট্রি ল্যাবের পরীক্ষাতে এই প্রমাণ মিলেছে।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “লাল দাগগুলি কিসের, তা জানতে ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হচ্ছে।”
ঘটনার সূত্রপাত প্রায় তিন সপ্তাহ আগে। আর জি করের ট্রমা কেয়ারে কর্মরত এক ইন্টার্ন অভিযোগ করেছিলেন, চিকিৎসা করার সময় তিনি রক্তমাখা গ্লাভসটি দেখতে পান। ওইদিন সকালে একজন এইচআইভি রোগীর রক্ত নেওয়ার জন্য গ্লাভস নেন। প্যাকেট থেকে বের করতে গিয়ে তাতে রক্তের দাগ দেখে তিনি ভাবেন, প্রথম গ্লাভসটা হয়তো কোনও কারণে নোংরা ছিল। সেই গ্লাভস ফেলে অন্যটা নিতে গিয়েও দেখেন একই অবস্থা। সিলড প্যাকেটের প্রায় প্রত্যেকটি গ্লাভসই নোংরা। নার্স জানিয়েছিলেন, সকালে ওই গ্লাভসের প্যাকেটটি খোলা হয়। চিকিৎসকদের দাবি, এমন রক্তমাখা গ্লাভস হাতে পরে চিকিৎসা করলে রোগীদের শরীরে সংক্রমণ হতে পারে। বিশেষত হেপাটাইসিস কিংবা এইচআইভি-র মতো রোগ ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তাঁরা।
‘রক্তমাখা’ এই গ্লাভস নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন সেই সময় ধর্মতলায় ‘আমরণ অনশনে’ বসা জুনিয়র ডাক্তারেরা। জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে তখন অভিযোগ করা হয়েছিল যে, এর আগেও আরজি করে এই ধরনের অপরিষ্কার গ্লাভসের জোগান দেওয়া হত।
জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে অভিযোগ পেয়েই তদন্তের নির্দেশ দেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোরকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া। ওই রক্তমাখা গ্লাভসগুলি আলাদা করে সরিয়ে রাখতেও বলা হয়েছিল।