আরজি করের ধর্ষণ-খুন কাণ্ডে তোলপাড় গোটা দেশ। প্রতিবাদ আছড়ে পড়েছে সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে তথা নাগরিক সমাজেও। এই নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ঘটনার পরেই অপরাধীর ‘ফাঁসি’র কথা বলেছিলেন তিনি। আজ ফের আশ্বাস দিলেন বড় পদক্ষেপের। বললেন, রবিবারের মধ্য়ে পুলিশ কিনারা করতে না পারলে সিবিআইকে মামলার তদন্তভার তুলে দেবেন।
সোমবার উত্তর ২৪ পরগনায় ওই চিকিৎসকের বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। বেরিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বাবা-মায়ের অভিযোগ, ওদের ভিতরেই কেউ আছে। এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে হবে।’’ এ ব্যাপারে পুলিশকে দেওয়া বিশেষ নির্দেশে মমতা বলেছেন, ‘‘দরকারে ওঁর বন্ধুবান্ধকে ডেকে কথা বলুন। যিনি ফোন করে সে দিন খবর দিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গেও কথা বলতে হবে। কাউকে ছাড়া হবে না।’’ প্রসঙ্গত, মৃত ওই চিকিৎসকের বাবার দাবি, শুক্রবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চার তলার সেমিনার হলে তাঁর মেয়ের মৃত্যুর খবর তাঁর বাড়িতে দিয়েছিলেন পুলিশেরই কেউ। তিনি ওই চিকিৎসকের পরিবারকে জানিয়েছিলেন, ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করেছেন। মমতার কথায় স্পষ্ট, সেই ঘটনাকে সহজ ভাবে মেনে নিচ্ছেন না নিহত ওই চিকিৎসকের বাবা-মা। তাঁরা এর মধ্যে একটা ষড়যন্ত্রের আঁচ পাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সেই বিষয়টিই তদন্ত করে দেখতে অনুরোধ করেছেন তাঁরা।
মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, “কলকাতার সেরা পুলিশ অফিসাররা ঘটনার তদন্ত করছে। তবে রবিবারের মধ্যে পুলিশ ঘটনার কিনারা না করতে পারলে পাবলিক স্যাটিসফেকশনের জন্য আমার সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার তুলে দেব।” তবে একই সঙ্গে মমতা মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘কলকাতা পুলিশ হল বিশ্বের সেরা পুলিশ। আমি সেরা অফিসারকে দায়িত্বও দিয়েছি। সিবিআই অনেক তদন্তভারই নিয়েছিল। তার বিচার হয়নি।’’
ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় ভাইরাল হয়েছে একটি কল রেকর্ডিং। তাতে শোনা যাচ্ছে, এপ্রান্ত থেকে বলা হচ্ছে, “বড্ড চাপে আছি। এমন একটা ভয়ানক ঘটনা ঘটল কিন্তু কিছু করতে পারছি না।” ওপ্রান্তের উত্তর, “আর জি কর-এ আর ভরসা কোরো না দাদা। সবাই বুঝতে পারছে যাকে অ্যারেস্ট করা হয়েছে তার একার পক্ষে এটা সম্ভব নয়। কমপক্ষে দুজন বা তিনজন এর পিছনে।” ওই কল রেকর্ডিংয়েই শোনা যাচ্ছে, ঘটনার সঙ্গে এক ইন্টার্নের নাকি যোগ রয়েছে। তাকে বাঁচাতেই ‘বলির পাঁঠা’ করা হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ারকে।
এই রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করেনি ‘The News Nest’। কিন্তু আরজি করের অন্দরের খবর, এই ঘটনায় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দিকে আঙুল উঠছে ছাত্রদের তরফেই। আর তা ধামাচাপা দিতেই তদন্তের অভিমুখ ঘোরানোর চেষ্টা চলছে। দু-এক জন ইন্টার্ন চিকিৎসকের নামও সামনে এসেছে, তাদের মধ্যে একজন পলাতক বলেও শোনা যাচ্ছে। কিন্তু এই নিয়ে স্পষ্ট কোনও অভিযোগ কেউই কোথাও দায়ের করেননি। পুলিশও কিছু জানায়নি এখনও।