আরজি কর মামলার শুনানিতে বড় নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। এই মুহূর্ত থেকে হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আরজি করে মোতায়েন হবে সিআইএসএফ।
আরজি করের কর্তব্যরত চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় উত্তাল দেশ। দিকে দিকে আন্দোলন-প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। মামলা চলছিল কলকাতা হাইকোর্টে। তারমাঝেই এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হস্তক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটার কিছু পরেই শুরু হয় শুনানি। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে ঘটনার শুনানি ছিল এদিন। আরজি করে মেডিক্যালে ভাঙচুর এবং হামলার ঘটনায় ২২ আগস্টের মধ্যে শীর্ষ আদালত রিপোর্ট তলব করেছে। হামলার ঘটনায় রাজ্যের পদক্ষেপ কী, তাও জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত। গত কয়েকদিনে আরজি করে হামলার ঘটনায়, ৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তেমনটাই জানিয়েছে রাজ্য।
গত ১৪ অগস্ট স্বাধীনতার মধ্যরাতে পথে নেমে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ জানান আমজনতা। সেই রাতেই হাসপাতালে ব্যাপক হামলার ঘটনা ঘটে। ভেঙে তছনছ করে দেওয়া হয় আরজি করের জরুরি বিভাগ, হুমকি দেওয়া হয় নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের। তারপর থেকেই নিরাপত্তাহীনতার কথা বলে প্রতিবাদ আরও প্রবল হয়ে ওঠে। সেই প্রেক্ষিতেই মঙ্গলবার আরজি কর মামলার শুনানিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে হাসপাতালের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা জানাল শীর্ষ আদালত।
মঙ্গলবার শুনানির সময়ে পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের কথা বলে। বলা হয়, এমন অনেক হাসপাতাল আছে, যেখানে নামী ডাক্তারদের দেখানোর জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয়, সেই দিনক্ষণে পরিষেবা না পাওয়ার অর্থ চিকিৎসা পাওয়া আরও পিছিয়ে যাওয়া। তাতে চিকিৎসকদের সংগঠনের তরফে বলা হয়, ”১৪ আগস্ট রাতে শুধু হাসপাতাল নয়, হস্টেলেও আক্রমণ করা হয়েছিল। মহিলা রেসিডেন্টদের সর্বোচ্চ হুমকি দেওয়া হয়। বলা হয়, আন্দোলন করা যাবে না। ভয়ে মা-বাবারা বাড়িতে ডেকে নেয়। আর আপনারা বলছেন কাজে যোগ দিতে! এই আতঙ্কের আবহে তা কীভাবে সম্ভব?”
তা শুনে বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, ৭০০ রেসিডেন্ট ডাক্তারের মধ্যে বেশিরভাগই নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় জন্য চলে গিয়েছে। ৩০-৪০ জন মহিলা, ৬০-৭০ জন পুরুষ ডাক্তার আছেন। শুধু নিজেদের পড়াশোনা নয়, পরিষেবা দেওয়ার স্বার্থে সমস্ত চিকিৎসকের হাসপাতালে ফিরে আসা উচিত। তাই CISF, CRPF পর্যাপ্ত পরিমাণে মোতায়েন করতে হবে আর জি কর হাসপাতালে (RG Kar Hospital)। তা শুনে রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল মন্তব্য করেন, ”এর পর থেকে রাজ্য পুলিশের আর কোনও দায়িত্ব রইল না।” তবে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়ার পরও কর্মবিরতি প্রত্যাহার নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি চিকিৎসক সংগঠনগুলি। তাদের প্রশ্ন, কেন্দ্রীয় বাহিনী চলে গেলে তার পরও তাদের নিরাপত্তা কতটা থাকবে? তাই সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ, হাসপাতালের সঙ্গে আলোচনা করে তবেই তা স্থির করা হবে।