তরতাজা দুই কিশোরকে রীতিমতো পরিকল্পনা করে খুন। প্রমাণ লোপাটের জন্য আলাদা জায়গায় দেহ ফেলা। কিন্তু কেন এই নৃশংসতা? মঙ্গলবার বাগুইআটির (Baguiati Murder) দুই কিশোরের দেহ উদ্ধারের পর থেকেই সকলের মনে প্রশ্ন, কেন এই খুন? তা নিয়ে আলোচনার মাঝেই উঠে এল ত্রিকোণ সম্পর্কের তত্ত্ব।
সূত্রের খবর, অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরীর স্ত্রী পূজার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল অতনুর। বাগুইআটির অতনু দের বাড়ির কয়েকটা বাড়ি পরেই অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরীর শ্বশুরবাড়ি। অভিযুক্তের স্ত্রী পুজাকে দিদি বলে ডাকত অতনু। তাঁদের বাড়িতে নিত্য আনাগোনাও ছিল ওই কিশোরের। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, অতনু ও পুজার এই মেলামেশা মোটেও ভাল ভাবে নিত না সত্যেন্দ্র। ফলে সত্যেন্দ্রর অতনুর উপর রাগ তৈরি হয়। তবে গোটাটাই অনুমান। সত্যেন্দ্র বা তার স্ত্রীকে জেরা না করা পর্যন্ত এ বিষয়েও নিশ্চিত হতে পারবে না তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে মামলা হাই কোর্টে, ‘পেনশনও নিই না’- সপাট জবাব মমতার
পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসা সমস্ত তথ্যে জানা গেছে, অতনু আর অভিষেক অনলাইনে সাট্টা খেলত। সেগুলি খেলেই কিছুদিন আগে ৫০ হাজার টাকা জেতে দুই কিশোর। ওই টাকা দিয়ে একটি সেকেন্ড হ্যান্ড স্পোর্টস বাইক কেনার পরিকল্পনা করে। ওদিকে অভিযুক্ত সত্যেন্দ্রর বাইকের পার্টসের দোকান ছিল। সেই দুই ভাইকে ৫০ হাজার টাকায় ভাল সেকেন্ড হ্যান্ড বাইক পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই টাকা পাওয়ার পর নাকি বাইক কিনে দেওয়ার পরিবর্তে আরও বেশি টাকা চাইতে শুরু করে সত্যেন্দ্র।
পুলিশ সূত্রে খবর, অনলাইনে সাট্টা খেলার সময়েই সত্যেন্দ্রর কাছে কয়েক হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ফেলে ওই দুই কিশোর। একদিকে নিজের স্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা আর অন্যদিকে সেই টাকা ফেরত না পাওয়া, সবমিলিয়েই ২ কিশোরের সঙ্গে তিক্ততা বাড়ে সত্যেন্দ্রর। এরপরই দুজনকে খুন করার পরিকল্পনা করে সে। খুনের জন্য ৫ জন সুপারি কিলারকে ভাড়াও করে। তবে পুলিশ নিশ্চিত যে, সত্যেন্দ্রর টার্গের ছিল অতনু দে-ই। অভিষেক নস্কর স্রেফ পরিস্থিতির স্বীকার।
প্রসঙ্গত, ২২ আগস্ট নিখোঁজ হয়ে যায় বাগুইআটির দুই পড়ুয়া। বাসন্তী হাইওয়েতে তাঁদের খুন করা হয়। দু’সপ্তাহ ধরে বসিরহাট থানার মর্গে পড়েছিল দেহ। অথচ জানতই না পুলিশ। এদিকে ১ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে মেসেজ করা হচ্ছিল পরিবারের সদস্যদের। পরে মঙ্গলবার উদ্ধার হয় দেহ।