এবার আদালতে শাহজাহান শেখের (Shahjahan Sheikh) বিস্ফোরক ‘চিঠি’। ওই চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, হেফাজতে শাহজাহানকে চাপ দিয়ে বয়ান রেকর্ড করেছে ইডি। পরিবারের সদস্যদের ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে শাহজাহান যে বয়ান দিয়েছেন, তা-ও তিনি প্রত্যাহার করতে চাইছেন বলে শাহজাহানের আইনজীবী জাকির হুসেন শনিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, এর আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত বলাগড়ের যুবনেতা কুন্তল ঘোষ এবং রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত শঙ্কর আঢ্যও একই অভিযোগ তুলেছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে।
শনিবার আদালতে শুনানি ছিল শেখ শাহজাহানের মামলার। ভরা এজলাসে এদিন শাহজাহানের আইনজীবী জাকির হোসেন একটি চিঠি তুলে ধরেন দাবি করেন, সেটি অভিযুক্ত শাহজাহান লিখেছেন। আদালতকক্ষে সেই চিঠি পড়া হয়। তাতে লেখা ছিল, “ইডি হেফাজতে ১ এপ্রিল থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত আমাকে চাপ দিয়ে মিথ্যে বয়ান রেকর্ড করানো হয়েছে। বয়ান না দিলে আমি, আমার সহোদর এবং আত্মীয়দের মাদক মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকিও দেওয়া হয়।” ওই চিঠিতেই বয়ান প্রত্যাহারের আর্জি জানান তিনি।
এর পরই ইডির তদন্তকারী অফিসার এজলাসেই জানতে চান, শাহজাহান এই চিঠি লিখেছেন কি না? এই বিতর্কিত ‘চিঠি’ নিয়ে ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী বিরোধিতা করেন। তিনি আদালতে দাবি করেন, এই চিঠি শাহজাহানের লেখা নয়। চিঠির বয়ান নিয়ে ইডির আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন। এই চিঠি কোনওভাবেই আদালতের রেকর্ডে না রাখার আবেদন জানানো হয়। ইডির যুক্তি, এই চিঠি গৃহীত হলে এতদিন শাহজাহান যে বয়ান দিয়েছেন তার গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। এসব নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে আদালত কক্ষ। শেষ পর্যন্ত আদালত জানায়, চিঠি গ্রহন করলেও ইডি স্পেশাল কোর্টে ১৫ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শুনানি হবে।
শুনানি শেষে ইডির আইনজীবী অরিজিৎ বলেন, ‘‘শাহজাহানের পক্ষ থেকে ওঁর আইনজীবী আদালতে রিট্র্যাক্টশন পিটিশন দিয়েছেন। আমাদেরও লিখিত আকারে বিরোধিতা করার সুযোগ দিয়েছে আদালত। আগামী শুনানিতে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। শাহজাহান অভিযোগ করেছেন, ওঁর কাছ থেকে জোর করে বয়ান নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি বিচারাধীন। আদালত সত্যতা বিচার করবে।’’
অন্য দিকে, শাহজাহানের আইনজীবী বলেন, ‘‘এটা কোনও চিঠি নয়, রিট্র্যাক্টশন পিটিশন। খুব সহজ কথা, আদালতে শাহজাহান আবেদন করে জানিয়েছেন যে, উনি নিজের ইচ্ছায় বয়ান দেননি। আর সেই কারণেই তিনি তাঁর বয়ান প্রত্যাহার করতে চেয়েছেন।’’