রাজ্যে লগ্নি টানতে সম্প্রতি স্পেন সফরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও। আর তা নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করতে শুরু করেছেন। এবার সেই যাবতীয় সমালোচনার জবাব দিলেন সৌরভ। সোজা ব্যাট চালিয়ে বল একেবারে স্টেডিয়াম পার। সৌরভের সোজাসাপ্টা জবাব, তাঁর কোনও রাজনৈতিক আনুগত্য নেই। বললেন,”আমার যেখানে ইচ্ছা, আমি সেখানে যাব। কাউকে কৈফিয়ত দেব না।”
শালবনিতে আগে থেকে বরাদ্দ জমিতে ইস্পাত কারখানায় বিনিয়োগের ঘোষণা করেছেন সৌরভ। সেই নিয়ে সমালোচনা-কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। সেই নিয়ে এবার সংবাদমাধ্যমে মুখ খুললেন তিনি। প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বললেন, “আমি একজন নাগরিকআমি কোনও সাংসদ, বিধায়ক, কাউন্সিলর বা মন্ত্রী নই। আমার কোনও রাজনৈতিক পরিচয় নেই। আমার যেখানে ইচ্ছে আমি যাব। তার জন্য কারও কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য নই। আমি কোথায় যাব, কেন যাব, তারও জবাবদিহি করব না।”
সৌরভ এদিন আরও বলেন, “যেটা ভাল মনে হবে, তাতেই যাব। গোটা পৃথিবী থেকে আমন্ত্রণ পাই আমি। অনুষ্ঠানটি যদি দিল্লিতে হত, তাহলে দিল্লি থেকে ঘোষণা করতাম। কলকাতায় হলে কলকাতা থেকে হতো। কোনও তফাত নেই। অনেকেই যান। এখানেই এত লাফালাফি, কথা হয়। আমরা জঙ্গলে থাকি না। সমাজে থাকি। মানুষের সঙ্গে দেখা, কথা সবই হয়। তার মধ্যে কোনও বিশেষ অর্থ নেই। যাঁরা এর মধ্যে বিতর্ক টানছেন, এসব করবেন না। মানুষের কাছে আমাদের একটা ভাবমূর্তি রয়েছে, সেটা নষ্ট করবেন না। যত ক্ষণ পর্যন্ত না আমার সিদ্ধান্তে কারও ক্ষতি হচ্ছে, যেখানে ইচ্ছে হবে, যাব। যা ভাল মনে হবে, করব।”
সম্প্রতি স্পেন সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গী হতে দেখা যায় সৌরভকে। সেখানে দাঁড়িয়ে পশ্চিম মেদিনীপুুরের শালবনিতে ইস্পাত কারখানা তৈরির ঘোষণা করেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হতে সময় লাগেনি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সৌরভকে ‘ধান্দাবাজ’ বলে কটাক্ষ করেন। বলেন, “বাম আমলে অ্য়াকাডেমি বানানোর জন্য় জমি নিয়েছিলেন। তৃণমূল সরকারের আমলেও নিউটাউনে জমি নিয়েছেন। কিছু করেননি। উনি এসব ধান্দাবাজি করে টাকা রোজগারের পথ খুঁজে থাকেন।”
সুকান্ত মজুমদার বলেন, “স্পেনে গিয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের শিল্প ঘোষণীর কী প্রয়োজন বুঝতে পারছি না। কলকাতা, দিল্লি অথবা মুম্বইয়েও করতে পারতেন!” বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা আবার ক্রিকেটের বিতর্কিত অধ্যায় টেনে অনে সৌরভকে আক্রমণ করেন। গ্রেগ চ্যাপেল অনেক আগেই মানুষ চিনেছিলেন বলে মন্তব্য করেন। তাঁকে ভুল বোঝার জন্য ক্ষমাও চান। এসবের মধ্যে এতদিন নিশ্চুপই ছিলেন সৌরভ। শেষ মেশ যখন মুখ খুললেন, ধারাল ভাষাতেই জবাব দিলেন।