সবকিছু পরিকল্পনা মাফিক চললে তৃণমূলে ফিরছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। শাসকদলের সর্বময় কর্ত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর এ বিষয়ে আলোচনা একেবারে চূড়ান্ত স্তরে পৌঁছেছে। শেষমুহূর্তে কোনো নাটকীয় পট পরিবর্তন না-হলে বিজেপির সঙ্গে যাবতীয় সংশ্রব এবং সম্পর্ক চুকিয়ে ‘জল শোভন’ ফিরছেন সেখানেই, যেখানে তিনি মাছের মতো স্বচ্ছন্দ।
২০১৯-এর ভাইফোঁটার দুপুর। ততদিনে, মন্ত্রী, মেয়র সব পদ ছেড়ে দিয়ে বান্ধবী বৈশাখীর সঙ্গে গোলপার্কে থাকা শুরু করে দিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Baisakhi)। দেখা গিয়েছিল, সেই দুপুরে দিদির কালীঘাটের বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছেন শোভন-বৈশাখী। তারপর আবার আজ বুধবার দুপুর। হঠাৎ দেখা গেল শোভন-বৈশাখী নবান্নের (Nabanna) ১৪ তলায়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে। দুপুর সাড়ে তিনিটের সময় যখন এই প্রতিবেদন লেখা হচ্ছে তখনও শোভন-বৈশাখী রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে।
আরও পড়ুন: Nupur Sharma: পয়গম্বর বিতর্কে বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মাকে তলব করল কলকাতা পুলিশ
শোভনের ঘনিষ্ঠদের দাবি, দল বা মন্ত্রিত্ব ছাড়লেও মমতার সঙ্গে শোভনের একটা স্নেহের সম্পর্ক বরাবরই বজায় থেকেছে। দু’তরফের মধ্যে বাক্যালাপ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, এমনও নয়। ভিন্ন রাজনৈতিক শিবিরে থাকলেও মমতা-শোভনের ব্যক্তিগত সম্পর্ক টোল খায়নি। সেই সূত্রেই শোভনের তৃণমূলে ফেরা নিয়ে আলাপ-আলোচনার শুরু হয়েছিল বলে দলীয় সূত্রে খবর। শাসক শিবিরের একটি সূত্রের দাবি, শোভনকে প্রয়াত সাধন পান্ডের বড়তলা বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে প্রার্থী করতে পারেন মমতা। কিন্তু শাসকদলেরই অন্য একটি অংশের বক্তব্য, ওই আসনে সাধনের স্ত্রীকে দাঁড় করানোর কথা রয়েছে। স্ত্রী না-হলে সাধনের কন্যা শ্রেয়া পান্ডেকেও বড়তলা আসনে টিকিট দেওয়া হতে পারে।
তবে তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, শোভন তৃণমূলে ফিরলেও মমতা এখনই তাঁকে বিধায়ক বা ওই ধরনের কোনও জনপ্রতিনিধিত্ব মূলক পরিসরে না-ও জায়গা দিতে পারেন। আপাতত তাঁকে দলে কোনও পদ দেওয়া হতে পারে। দলের একাংশে আবার জল্পনা শুরু হয়েছে রত্নাকে নিয়েও। শোভন তৃণমূলে ফিরলে রত্না তা কী ভাবে নেবেন, তা নিয়েও দলের নেতাদের একটা অংশ আলোচনা শুরু করেছেন। তবে দলের শীর্ষসূত্রের দাবি, রত্নার সঙ্গে ইতিমধ্যেই দলনেত্রী নিজে কথা বলে নিয়েছেন। ফলে ওই বিষয়টির ফয়সালা হয়ে গিয়েছে।
আরও যে প্রশ্নটি নিয়ে তৃণমূলে জল্পান চলছে, তা হল শোভনের সঙ্গে বৈশাখীও কি ‘আনুষ্ঠানিক’ ভাবে তৃণমূলে যোগ দেবেন? গত কয়েক বছরের তথ্য এবং ঘটনাক্রম বলছে, শোভন এবং বৈশাখী সিদ্ধান্ত নেন একত্রেই। সে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তই হোক বা ব্যক্তিগত। সেই প্রেক্ষিতে বৈশাখীও তৃণমূলে যোগ দেবেন কি না, নাকি তিনি তাঁর অধ্যাপনা পেশা নিয়েই ব্যস্ত থাকবেন, সেটিই দেখার।
আরও পড়ুন: Anis Khan: সিবিআই প্রয়োজন নেই, আনিস মামলায় সিটের উপরেই আস্থা হাইকোর্টের