এসএসসি নিয়োগ দু্র্নীতির মাস্টারমাইন্ড প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শুক্রবার আলিপুরে আদালতে এমনটাই দাবি করলেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। এদিকে অসুস্থতার অজুহাতে ফের জামিনের আরজি জানালেন পার্থ চট্টোপা্ধ্যায়। বিচারকের সামনে আবারও কেঁদে ফেললেন তিনি।
শুক্রবার আলিপুর আদালতে দু’পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর উঠে দাঁড়ান এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া পার্থ। তিনি বলেন, ‘‘আমার ভূমিকা কী? প্রাথমিক বোর্ড কিংবা এসএসসি স্বয়ংশাসিত দফতর। তারা প্রার্থীদের চয়ন করত। আমি অর্থনীতিতে স্নাতক।’’ এর পর তাঁর পরিবারের অন্যান্যদের পরিচয় তুলে ধরেন প্রাক্তন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমার কাকা প্রবাদপ্রতিম সাহিত্যিক ছিলেন। আমার মা-বাবা দু’জনেই ছিলেন উচ্চশিক্ষিত। আমি নিজে এমবিএ, ডক্টরেট। রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র ছিলাম। দীর্ঘদিন একটি নামী সংস্থায় উঁচু পদে চাকরি করেছি। আমায় জামিন দেওয়া হোক।”
তার পর বিচারকের উদ্দেশে বলেন, ‘‘স্যার আমি খুব অসুস্থ। কে আমাকে সাহায্য করবে? সারা দিন অনেক ওষুধ খাই।’’ করুণ মুখে পার্থ বলেন, ‘‘বিচারের প্রতি আস্থা রাখছি। আপনি আপনার মতো বিচার করবেন। আপনার কাছে বিচারের আশায় আছি।’’
আরও পড়ুন: ১৮ কোটিতে থামল গোনা, পাঁচটি ট্রাঙ্কে টাকা ভরে গার্ডেনরিচ থেকে ফিরল ED
শুক্রবার পার্থকে নিজেদের হেফাজতে চায় সিবিআই। তাদের দাবি এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতিতে মূল অভিযুক্তই আসলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে চায় তারা। আদালতে পার্থের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনেন তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী। অন্য দিকে, পার্থের আইনজীবীর দাবি, তাঁর মক্কেল তো জেল হেফাজতেই রয়েছেন। আবার আলাদা করে তাঁকে গ্রেফতারি কেন?
পার্থর আইনজীবীরা এদিন আদালতে বলেন, ইডি গ্রেফতার করেছে প্রায় ৬০ দিন হতে চলল। এখনও ইডি চার্জশিট দিতে পারেনি। তাছাড়া এসএসসি দুর্নীতি মামলার এফআইআরেও পার্থর নাম ছিল না। সেইসঙ্গে প্রাক্তন শিক্ষা ও শিল্পমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার কথাও তুলে ধরা হয় আদালতে। পাল্টা সওয়ালে সিবিআই বলে, এখন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জামিন দিলে তদন্ত প্রক্রিয়া প্রভাবিত হতে পারে। দীর্ঘ এক ঘণ্টা শুনানির পর রায় ঘোষণা স্থগিত রাখেন বিচারক। আদালত জানিয়েছে, দুপুর সাড়ে তিনটের সময়ে রায় দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: এসএসসি মামলা : সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময়