সপ্তাহের প্রথম দিন আদালত বসতেই শিক্ষক নিয়োগ মামলায় ফের আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল সিবিআই। নবম – দশম নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে সিবিআই আধিকারিকদের অপদার্থতায় ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। বিচারপতির একের পর এক প্রশ্নের মুখে কার্যত বোবা হয়ে যান সিবিআইয়ের আইনজীবী।
সোমবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বসুর বেঞ্চে। সেখানেই সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। তিনি জানতে চান, ‘‘নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত বাকিরা কেন ঘুরে বেড়াচ্ছেন? তাঁদের কেন ছেড়ে রাখা হয়েছে?’’ আবার যাঁদের বিরুদ্ধে টাকা দেওয়া-নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের নিয়েও প্রশ্ন করে কোর্ট। বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘‘যাঁরা টাকা দিয়েছেন এবং যাঁরা নিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? তাঁদের হেফাজতে নিয়ে কেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না? এখনও সিবিআই উদাসীন কেন? এত দিনে তো অনেক টাকা পাচার হয়ে গিয়েছে!’’
আরও পড়ুন: Republic Day 2023: কর্তব্যপথে ‘দুর্গাপুজো থিম’ নিয়ে বাংলার ট্যাবলো, নারী ক্ষমতায়নকে তুলে ধরল রাজ্য
এই সমস্ত প্রশ্নবাণের উল্টোদিকে ছিলেন সিবিআইয়ের আইনজীবী এবং কোর্টে হাজির কর্তারা। তাঁদের জবাব অপেক্ষা না করেই এর পর বিচারপতি বসু বলেন, ‘‘আপনারা কী করবেন আদালত তা বার বার বলে দেবে এটা ভাল দেখায় না। নিজেদের কাজ নিজেরা করুন। কাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন সেটাও বলে দিতে হচ্ছে। প্রতি দিন আসছেন আর কী করবেন সেটার উপদেশ শুনে চলে যাচ্ছে। এটা চলতে পারে না। যা করার তাড়াতাড়ি করুন।’’
বিচারপতির একের পর এক প্রশ্নে কার্যত বাকরুদ্ধ হয়ে যান সিবিআইয়ের আইনজীবী। এখানেই থামেননি বিচারপতি। এর পর তিনি প্রশ্ন করেন, ‘যারা ওএমআর শিট বিকৃত করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন? সিবিআই কী ভাবে তদন্ত করবে সেটা কেন বার বার আদালতকে বলে দিতে হবে? সিবিআই – কমিশন কী ভাবে কাজ করবে সেটা আদালতকে বারবার বলে দিতে হচ্ছে? এটা ভালো দেখায় না। কেন দুর্নীতিতে যুক্তদের প্রতি এত সদয় সিবিআই’?
রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করছে সিবিআই। আর বারবার আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইতিমধ্যে ২ বার তদন্তকারী আধিকারিক বদলের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে তাতেও তদন্তের অগ্রগতিতে খুশি নয় আদালত।