বৃহস্পতিবার তাঁর জামিন চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু ইডি’র প্রবল বিরোধিতায় তা খারিজ হয়ে গেল। ফলে আরও ১৪ দিন জেল হেফাজতে থাকতে হবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। আজ ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হয় দু’জনকে। সেখানেই তাঁদের জামিনের আবেদন খারিজ করে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত পার্থ–অর্পিতাকে জেল হেফাজত থাকার নির্দেশ দিল আদালত। আদালতে পার্থর আইনজীবী টেকনিক্যাল কারণ দেখিয়ে জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়।
আদালতে পার্থর আইনজীবী জানান, প্রাক্তন মন্ত্রীর চিকিৎসার প্রয়োজন। দ্রুত চিকিৎসা না হলে তাঁর ‘বিপদ’ হতে পারে। তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিবের হিমোগ্লোবিন কম, তাঁর শরীরে ক্রিয়েটিনিনের পরিমাণও বেড়েছে। একা চলাফেলার ক্ষেত্রেও তাঁর অসুবিধা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পার্থর আইনজীবী।
আরও পড়ুন: Calcutta High Court: ৫ বছরে ববি-মদনদের এত সম্পত্তি কিভাবে? মামলায় ইডিকে জুড়ল হাই কোর্ট
১২ তারিখ প্রাক্তন মন্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হতে হয়। সব দিক বিবেচনা করে পার্থর হয়ে আরও এক বার জামিনের আবেদন জানান তাঁর আইনজীবী।যদিও জেল হেফাজতে মন্ত্রীর স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ার যুক্তি মানতে চাননি ইডি-র আইনজীবী। তিনি আদালতে জানান, প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা জানার জন্য ভুবনেশ্বরের এমসে পাঠানো হয়েছিল। তা ছাড়া দু’দিন অন্তর জোকা ইএসআই-তে তাঁর স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয় বলে পার্থর জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেন ইডির আইনজীবী।
ইডি-র আইনজীবীর দাবি, পার্থ তদন্তে সহযোগিতা করেননি। পার্থ-‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে বিপুল অর্থের উৎস সম্পর্কেও মুখ খোলেননি প্রাক্তন মন্ত্রী। ইডি প্রথমে ৫০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের কথা জানালেও পরে আরও ১০টি অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে বলে বৃহস্পতিবার দাবি করেছে ইডি। পার্থর স্ত্রী বাবলি চ্যাটার্জির নামে একটি ট্রাস্টের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। এই ট্রাস্টের নামে একটি ‘ইন্টারন্যাশনাল স্কুল আছে বলে আদালতকে জানিয়েছেন ইডি-র আইনজীবী। এই ট্রাস্টের মাধ্যমে টাকা তছরুপ করা হত বলেও দাবি করেছে ইডি।
আদালতে ইডি-র দাবি, অর্পিতার জীবন বিমার টাকা আসত পার্থর কাছ থেকেই। এই জীবন বিমাগুলির নমিনি হিসাবে পার্থর কাছেই এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য থাকত। ইডি-র তরফে দাবি করা হয়েছে, পার্থর ফোন পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, বিমা সংক্রান্ত যাবতীয় মেসেজ পার্থর ফোনেই আসত। এখান থেকেই প্রমাণিত যে, পার্থই বিমার সমস্ত টাকা দিতেন।
বুধবার পার্থকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর, তাঁর ফোন থেকে জীবন বিমা সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার কথা প্রাক্তন মন্ত্রীকে জানান ইডি-র আধিকারিকরা। পার্থকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর, তাঁর বয়ানের কাগজ সই করাতে গেলা পার্থ নাকি তা ছিঁড়ে ফেলে দেন। বৃহস্পতিবার আদালতে এমনই দাবি করেছেন ইডির আইনজীবী। শেষে আগামী ৩১ অগস্ট পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারপতি।
আরও পড়ুন: Cabinet Meeting: আজ নবান্নে মন্ত্রিসভার মেগা বৈঠক, নতুন মন্ত্রীদের কী বার্তা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী?