আমতায় ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুর (Anis Khan Death) তদন্তে পরতে পরতে নতুন মোড়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) নির্দেশে রাজ্য তিন সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন হয়েছে। আর সেই সিট তদন্তভার গ্রহণ করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তিন পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করার খবর পাওয়া গিয়েছিল মঙ্গলবার। এবার বুধবার নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, আমতার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পুলিশের দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমতায় তদন্ত প্রক্রিয়া সবে শুরু হয়েছে। এখনও আমরা জানি না আসল ঘটনা কী। দ্বিতীয়বার পুলিশ গিয়েছিল ময়নাতদন্তের জন্য, তাঁদের অনুমতি দেয়নি। তাঁদের বাধা দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশের দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
যে দুইজনে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে একজন কাশীনাথ বেরা (হোম গার্ড) এবং অন্যজন প্রীতম ভট্টাচার্য (সিভিক ভলান্টিয়ার)। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, “যারা দোষী, তাদের বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব। আমরা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ঘটনা সকলের সামনে তুলে ধরব।” সিভিক ভলান্টিয়ার এবং হোমগার্ড দুই জনেই আমতা থানার বলে জানা গিয়েছে। এদিকে স্বাভাবিকভাবেই আরও একটি প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি এই দুই জনই সেই রাতে আনিসের বাড়িতে গিয়েছিলেন?
যদিও বিষয়টি নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাইছে না পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তাই এই নিয়ে নির্দিষ্টভাবে কিছু এখনই বলা ঠিক নয়। আমরা আমাদের দিকে যে গাফিলতি পেয়েছি, তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
আনিস খান হত্যাকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন মৃতের বাবা সালাম খান থেকে শুরু করে বিজেপি, বাম-সহ একাধিক রাজনৈতিক দল। সে প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “তাপসী মালিকের হত্যাকাণ্ড থেকে নন্দীগ্রাম কাণ্ড, রবীন্দ্রনাথের নোবেল চুরির তদন্তভারও রয়েছে সিবিআইয়ের হাতেই। কিন্তু এতদিনেও এর কোনও সুরাহা হয়নি।” অর্থাৎ একপ্রকার সিবিআই তদন্তের দাবি খারিজ করেছেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, ”বারবার সিবিআই তদন্তের কথা বলে রাজ্য পুলিশের মনোবল ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।” এরপরই তিনি মনে করিয়ে দিলেন, যে কোনও বিপদে রাজ্য পুলিশই বাংলার মানুষের পাশে থাকে। এক্ষেত্রে সঠিক তদন্তই হবে।
এত দিন আনিসের মৃত্যু মামলাকে ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’ মামলা হিসেবে দেখছিলেন তদন্তকারীরা। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য পুলিশের স্বয়ং ডিজিপি আনিস-মৃত্যু নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বললেন, ‘‘আনিস খান মার্ডার কেস…।’’