বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে লাগাতার সওয়াল করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ ছিল, কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল তথা বিজেপি ক্রমাগত বিচারব্যবস্থার উপর প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছে। শনিবার ন্যাশনাল জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমির আঞ্চলিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে তেমন কোনও অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী করলেন না ঠিকই। তবে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় সহ বিচারপতিদের ওই সম্মেলনে স্পষ্ট ভাবেই তাঁর আগ্রহের কথা জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শনিবার ন্যাশনাল জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমির একই মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী, দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ছাড়া ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে বলছি না, কাউকে আঘাতও করতে চাই না। তবে এটা বলতে চাই, বিচারব্যবস্থায় রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব থাকলে মানুষ কোথায় যাবে?”
বিচারপতিদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমার কথাটা অন্যভাবে নেবেন না। আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমার স্বনির্বন্ধ অনুরোধ, বিচারব্যবস্থা যেন রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট না হয়। যেন খাঁটি থাকে। পুরোপুরি খাঁটি, সৎ এবং পবিত্র।”
মমতা বলেন, ‘‘আমাকেও নিজেদের পরিবারের সদস্য বলে মনে করুন। আমিও আইনের লোক। আমি তিন-চারটি কেস লড়েছি। বিচার ব্যবস্থা আমাদের কাছে পবিত্র, মন্দির-মসজিদ-গির্জা-গুরুদ্বারের মতো। সরকার বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে আছে। যদি বিচার ব্যবস্থা আমাদের সাহায্য না করে, তা হলে মানুষ কোথায় যাবে? যখন মানুষের জীবনে সমস্যা আসে, তখন মানুষের বিশ্বাস থাকে যে, দেশের বিচার ব্যবস্থা আমাদের রক্ষা করবে। বিচারপতি চন্দ্রচূড় দেশের বিচার ব্যবস্থাকে উন্নত করতে সাহায্য করছেন। আমরা বিচার ব্যবস্থাকে উন্নত করতে হাজার কোটি খরচ করেছি। ৭০ একর জমি দিয়েছি। রাজারহাটে নতুন হাই কোর্টের জায়গা দিয়েছি।’’
বিচারপতিদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আমি আপনাদের পরিবারেরই সদস্য। আইন পাশ করেছি। তিন-চারটে মামলাও লড়েছি। আমারও আইনজীবীর গাউন রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যখন একথা বলছিলেন, তখন বেশ আমোদিতই দেখাচ্ছিল প্রধান বিচারপতিকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আগামী দিনেও আমার ফের মামলা লড়ার ইচ্ছা রয়েছে। নিজের জন্য নয়, মানুষের জন্য। কথা দিচ্ছি কোনও পারিশ্রমিক নেব না।