পুরীর মন্দিরে প্রতি দিনই জগন্নাথদেবকে ছাপ্পান্ন ভোগ নিবেদন করা হয়। তবু রথযাত্রা উপলক্ষে বিশেষ আয়োজন থাকে এ সময়ে। জগন্নাথের ভোগে মূলত দুই ধরনের খাবার দেওয়া হয়। এক দিকে থাকে ভাত, ডাল, তরিতরকারি, খিচুড়ি জাতীয় রান্না করা খাবার। আর থাকে খাজা, গজা, খই, মুড়কি জাতীয় শুকনো খাবার।
বেলা ১২টা থেকে ১টার মধ্যে জগন্নাথ দেবকে যে ভোগ দেওয়া হয় তাকে বলা হয় মধ্যাহ্ন ভোগ। এই ভোগে থাকে ৪০টি পদ। আর সেগুলির মধ্যে অন্যতম হল ‘ডালমা’। ডাল এবং সবজি দিয়ে এই ভোগ তৈরি করা হয়। রান্না হয় জলে সিদ্ধ করে। রান্নায় কোনও তেল ব্যবহৃত হয় না।
মহাপ্রসাদ ছাড়াও এই ডালমা ওড়িশা প্রদেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় খাবার। ডালমা অনেকটি বাঙালিদের সবজি ডালের মতো। খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। এবং সম্পূর্ণ নিরামিষ।কী ভাবে তৈরি করবেন সেই ডালমা? রইল তার রেসিপি।
উপকরণ
অরহড় ডাল: দেড় কাপ
ছোলার ডাল: দেড় কাপ
পটল: ২-৩টি
মিষ্টি কুমড়ো: ১ বাটি (ডুমো করে কাটা)
কাঁচা কলা: ১টি।
ঝিঙে: ১টি
মুলো: ২টি
মুখী কচু বা গাঠি কচু: ১ কাপ (দুই টুকরো করে কাটা)
আদা বাটা: ২-৩ চামচ
সৈন্ধব নুন: স্বাদ অনুযায়ী
হলুদ: সামান্য
গুড়: ৩ কাপ
ঘি: ৪-৫ টেবিল চামচ
হিং: ১ চামচ
শুকনো লঙ্কা: ৪-৫টি
তেজপাতা: ২টি
পাঁচফোড়ন: ১ চা চামচ
নারকোল কোরা: ২ টেবিল চামচ
প্রণালী
১) প্রথমে দু’রকম ডাল ভাল করে ধুয়ে এক ঘণ্টা জলে ভিজিয়ে রাখুন।
২) এর পর ডালমার মশলা বানিয়ে নিন।
৩) গোটা জিরে, গোটা ধনে, গোলমরিচ, মেথি দানা, লবঙ্গ, দারচিনি, বড় এলাচ, শুকনো লঙ্কা, মৌরি এবং তেজপাতা শুকনো খোলায় ভেজে নিন। মশলা সামান্য ঠান্ডা করে মিক্সিতে গুঁড়িয়ে রাখুন।
৪) পটলের খোসা চেঁছে দুই টুকরো করে কেটে নিন। একই ভাবে ঝিঙে চেঁছে নিন। টুকরো করে কেটে নিন।
৫) কুমড়ো, বেগুন, কাঁচাকলা, মুলো এবং কচু ডুমো করে কেটে নিন।
৬) এ বার একটি বড় পাত্রে ডাল, মুলো, কাঁচকলা নিয়ে সেদ্ধ চাপিয়ে দিন। ডাল অর্ধেক সেদ্ধ হয়ে এলে তাতে বাকি সব সব্জি এবং নুন দিয়ে সেদ্ধ করে নিন।
৭) অন্য একটি কড়াইয়ে ঘি দিয়ে শুকনো লঙ্কা, পাঁচফোঁড়ন, তেজপাতা ফোড়ন দিয়ে একটু নেড়ে তাতে হলুদ, আদা বাটা, হিং দিয়ে ফোড়ন বানিয়ে নিন।
৮) সেদ্ধ ডাল-সব্জির মধ্যে ওই মশলা দিয়ে ফুটিয়ে নিন।
৯) এতে দিয়ে দিন ভাজা মশলা। সব উপকরণ ভাল মতো মিশিয়ে নিয়ে সামান্য ফুটিয়ে নিন। গুড় এবং নারকেল কোরা দিয়ে ফের নাড়াচাড়া করে নিন। উপরে আরও খানিকটা ঘি ছড়িয়ে দিন।