বাচ্চাদের সাধারণত ৬ মাস বয়স থেকে সেমি সলিড খাবার দেওয়া শুরু করা হয়। এই সময়ে শিশুর বুকের দুধ বা ফর্মুলার পাশাপাশি অতিরিক্ত পুষ্টির প্রয়োজন হয়, কারণ শুধুমাত্র তরল খাবার শিশুর বাড়ন্ত পুষ্টির চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট নয়। তবে সেমি সলিড খাবার শুরু করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
সেমি সলিড খাবার দেওয়ার পদ্ধতি:
১. সঠিক সময় বেছে নিন: শিশুর ৬ মাস পূর্ণ হলে, তার কিছু লক্ষণ পর্যবেক্ষণ করুন যেমন:
শিশু নিজে বসে থাকার চেষ্টা করে।
মুখ দিয়ে চিবানো বা চোষারর চেষ্টা করে।
আপনার খাবারের দিকে আগ্রহ দেখায়।
মাটি খেয়ে ফেলে এবং মুখ দিয়ে খাবার ফেলে না দেওয়ার প্রবণতা।
২. একটি খাবার দিয়ে শুরু করুন: প্রথমে এক ধরণের সেমি সলিড খাবার দিয়ে শুরু করুন, যেমন:
চালের জল (Rice porridge): ফিঞ্চে সিদ্ধ করা চালের পানি।
ডালের জল: মসুর ডাল বা মুগ ডাল খুব পাতলা করে রান্না করে তার জল।
ফল পিউরি (Fruit puree): পাকা কলা বা আপেল সেদ্ধ করে তার পিউরি।
সবজি পিউরি (Vegetable puree): মিষ্টি আলু, গাজর সেদ্ধ করে মিহি করে ব্লেন্ড করা।
৩. ছোট ছোট পরিমাণে খাওয়ান: প্রথম দিকে ১-২ চামচ খাবার দিন। প্রথমবারেই বেশি খাবার না দিয়ে শিশুকে ধীরে ধীরে নতুন খাবারের স্বাদে অভ্যস্ত হতে দিন।
৪. একটি খাবার এক সপ্তাহ দিন: প্রতিবার নতুন খাবার দেওয়ার সময় ৩-৭ দিন সেই খাবার দিন। এতে করে শিশুর কোন অ্যালার্জি বা অন্যান্য সমস্যা হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা যায়।
৫. নরম ও মসৃণ খাবার দিন: শিশুর জন্য প্রথম খাবারগুলি খুব নরম ও মসৃণ হওয়া উচিত, যেন সে সহজে চিবিয়ে বা গিলে খেতে পারে।
সেমি সলিড খাবারের উদাহরণ:
পাকা কলা: মিহি করে ব্লেন্ড করা।
মিষ্টি আলু, গাজর পিউরি।
সেদ্ধ করা আপেল বা নাশপাতির পিউরি।
চালের পেস্ট বা পাতলা খিচুড়ি।
সতর্কতা:
প্রথমে শিশুদের কোনো প্রকার মসলা বা নুন দেওয়া উচিত নয়।
যদি কোনো খাবারে অ্যালার্জির লক্ষণ দেখা যায়, যেমন ত্বকে র্যাশ বা পেট খারাপ, তবে সাথে সাথেই সেই খাবার বন্ধ করে ডাক্তারকে জানানো উচিত।
বাচ্চাকে বসিয়ে খাওয়ান এবং খাওয়ার সময় সব সময় তার সাথে থাকুন, যাতে কোনো সমস্যা হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
সঠিকভাবে ধীরে ধীরে সেমি সলিড খাবার খাওয়ানো হলে শিশু সহজেই নতুন খাবারের সাথে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে এবং তার পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে।