অনেকেই ভাবেন “গরুর দুধে তো অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। ছয়মাস বয়স থেকে বুকের দুধের পাশাপাশি অন্য শক্ত খাবার তাকে যখন দিচ্ছিই, তাহলে গরুর দুধ খাওয়াব না কেন?” আসলে আপনার সোনামণির পরিপাকতন্ত্র গরুর দুধ হজমের জন্য প্রস্তুত হতে কিছুটা সময় লাগে। তাছাড়া এসময়ে তার ঠিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণও এতে যথেষ্ট পরিমাণে থাকে না।কিন্তু গরুর দুধ শিশুকে দিতে হলে আমেরিকান একাডেমি অফ পেডিয়াট্রিকস-এর মতে তার বয়স এক বছর হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিৎ। কেন তার আগে তাকে গরুর দুধ খাওয়ানো ঠিক হবে না, চলুন জেনে নিই তার কারণগুলো।
বিশেষজ্ঞরা বলেন ,এক বছর পর থেকে শিশুকে গরুর দুধ খাওয়াতে। তার আগে নয়। কারণে গরুর দুধ মানেই যে তা শিশুর জন্য খুব ভালো এমনটা কিন্তু নয়। গরুর দুধে আয়রন, ভিটামিন সি এবং শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য বেশ কিছু প্রয়োজনীয় খনিজ থাকে না।
গরুর দুধ হজম করা শিশুর জন্য সহজ নয়। এর উচ্চমাত্রার প্রোটিন কিডনিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। তা বহু সময় বিপজ্জনক হতে পারে।
তাছাড়া এ বয়সে তার চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত চর্বি বা ফ্যাটও এতে থাকে না। ফলে এ সকল প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণের অভাবে তার সঠিকভাবে বেড়ে ওঠাও বাধাগ্রস্থ হতে পারে।
গরুর দুধের প্রোটিন থাকার জন্যে আরও কিছু সমস্যার কারণ হতে পারে। যেমন অ্যালার্জির সমস্যা কিংবা কোনও কোনও ক্ষেত্রে পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়ার মত সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
অনেক গবেষণায় আবার এও দেখা গেছে যে খুব অল্প বয়স থেকে শিশুকে গরুর দুধ দিলে পরবর্তীতে তার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায় – বিশেষতঃ যদি পরিবারের অন্য কারও যদি ডায়াবেটিস থাকে।
যদি শিশুর বয়স এক বছরের কম হয় তাহলে গরুর দুধ তার অন্ত্রের রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
তবে এক বছর বয়স থেকে গরুর দুধ হজম করতে তার অসুবিধা হবার কথা নয় এবং তখন তার শারীরিক ক্ষতির সম্ভাবনা কমে যায়। তাই এরপর থেকে গরুর দুধ তাকে দিতে কোনও বাধা নেই। এটি কিন্তু ক্যালসিয়ামের খুব ভাল উৎস যা কিনা তার হাড়কে মজবুত করতে সাহায্য করবে।