মায়ের বুকের দুধে প্রথমবারের মতো প্লাস্টিকের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা বা মাইক্রোপ্লাস্টিক শনাক্ত হয়েছে। এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে বলে জানায় ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইল ও দ্য গার্ডিয়ান।
২০২০ সালে নবজাতকের প্লাসেন্টায় মাইক্রোপ্লাস্টিকের সন্ধান পাওয়া ইতালিয়ান গবেষক দলটিই নতুন এ গবেষণা করেছেন।সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইতালির রোমের ৩৪ জন মায়ের বুকের দুধের নমুনা পরীক্ষা করে চারভাগের তিন ভাগ মায়ের বুকের দুধেই মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্বের প্রমাণ মেলে। এতে বলা হয়, এই গবেষণায় পাওয়া প্রমাণে নবজাতক শিশুর স্বাস্থ্যের বড় ঝুঁকির প্রমাণ মিলল।
চিকিৎসকদের মতে, মায়ের দুধ সন্তানের পুষ্টি এবং ভবিষ্যৎ সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। প্যাকেট বন্দি বা আলাদা করে পরীক্ষাগারে বানানো কোনও খাবার বা পানীয়ই এর বিকল্প হতে পারে না। আর সেই কারণেই চিকিৎসকরা বেশির ভাগ মাকেই স্তন্যপান করানোর পরামর্শ দেন।
কিন্তু হালে যে তথ্য বিজ্ঞানীদের হাতে এল, তা রীতিমতো আতঙ্কিত করেছে তাঁদের। তাহলে কি আর মায়ের দুধও নিরাপদ থাকছে না? দূষণ এবং প্লাস্টিকের ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে পরিস্থিতি সেদিকেই এগিয়ে চলেছে— এমনই মত বিজ্ঞানীদের।
আরও পড়ুন: Junk Food: সবচেয়ে ক্ষতিকারক ৮ জাঙ্ক ফুড কোনগুলো জানেন?
বর্তমান পরিস্থিতিতে কী পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা?
হবু বা বা যাঁরা সদ্য মা হয়েছেন, তাঁদের কিছু পরামর্শ দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এঘুলি মেনে চললে, অনেক ক্ষেত্রেই বুকের দুধে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ কমানো যেতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।
- প্রথমেই বাদ দিতে বলছেন প্লাস্টিকের প্যাকেট বা কৌটোয় রাখা খাবার। তাঁদের মতে, এগুলি থেকে খাবারে সবচেয়ে বেশি মিশছে মাইক্রোপ্লাস্টিক। সেগুলি রক্তের মধ্যে দিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে স্তনে।
- এর পাশাপাশি প্লাস্টিকের পাত্রে বা বোতলে রাখা জলও এড়িয়ে চলতে বলছেন তাঁরা।
- খাবারের তালিকা থেকে বাদ দিতে বলা হচ্ছে সামুদ্রিক মাছ বা প্রাণী। এগুলির শরীরেও ব্যাপক মাত্রায় মাইক্রোপ্লাস্টিকের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। যা শরীরে ঢুকছে খাবারের সঙ্গে।
- এর সঙ্গে এমন টুথপেস্ট বা প্রসাধনী ব্যবহার না করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, যেগুলি প্লাস্টিকের কৌটো বা টিউবে আসে।
- এমনকী সিন্থেটিক জামাকাপড় থেকেও মাইক্রোপ্লাস্টিক ঢুকতে পারে শরীরে। ত্বকের ছিদ্রপথ তো বটেই তার পাশাপাশি মুখ দিয়েও ঢুকতে পারে এই মারাত্মক বস্তুটি।
বিজ্ঞানীরা শিশুদের জন্যও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন।
- প্রথমত, প্লাস্টিকের ফিডিং বোতলে খাওয়ানোর বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এটি থেকেও মাইক্রোপ্লাস্টিক শিশুদের শরীরে যেতে পারে।
- গরুর দুধ শিশুদের খাওয়ানোর বিষয়ে সতর্ক করেছেন তাঁরা। কারণ গরুর দুধে মারাত্মক পরিমাণে এই প্লাস্টিকের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
আরও পড়ুন: Weight Loss Drinks: লেবুর জলের সঙ্গে আদার কুচি, পুজোর আগেই ঝরিয়ে ফেলুন বাড়তি মেদ