ময়নাতদন্তে দেখা গেল, কেকে-র হৃদ্যন্ত্র প্রায় সাদা হয়ে গিয়েছিল। হার্টের উপর পড়েছিল মেদের আস্তরণ। হৃদ্যন্ত্রের ভিতরের সব ভাল্ভ অনেকটা শক্ত হয়ে গিয়েছিল। চিকিৎসকরা বলছেন, এ সব ‘ফ্যাটি হার্ট’-এর উপসর্গ। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে কেকে-র মৃত্যুর প্রাথমিক কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘মায়োকার্ডিয়াল ইনফারকশন’ (Myocardial infarction)।
কী এই ‘মায়োকার্ডিয়াল ইনফারকশন’?
ডাক্তারি পরিভাষায় যা ‘মায়োকার্ডিয়াল ইনফারকশন’, চলতি কথায় তাকেই আমরা বলি ‘হার্ট অ্যাটাক’। হার্টের পাম্পিং ফেল করে যায়। অর্থাৎ কেকে-র মৃত্যুর পিছনে কোনও ‘অন্য’ কারণ নেই বলেই উল্লেখ প্রাথমিক রিপোর্টে।
কেকে-র ক্ষেত্রে হয়তো যে সমস্যাটা হয়েছিল, সেই সমস্যাটা আপনার ক্ষেত্রেও হতে পারে! ফ্যাটি হার্ট ধরা না পড়া, কারণ এই অসুখের কিন্তু তেমন কোনও উপসর্গ পাওয়া যায় না, অথচ হার্টে ফ্যাট জমার ফলে হার্ট সংক্রান্ত অন্যান্য সমস্যা বাড়তে থাকে। ফ্যাটি লিভার নিয়ে এখন অনেক সময়েই আলোচনা হয়ে থাকে। বিশেষ করে যাঁদের নিয়মিত মদ্যপানের অভ্যাস রয়েছে, তাঁদের অনেকেই ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভুগতে পারেন বলে সতর্ক করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু ফ্যাটি হার্ট সম্পর্কে সচেতনতা এখনও ততটা নেই। হৃদ্যন্ত্রের চারপাশে মেদের একটি আস্তরণ পড়তে শুরু করে। এটি আস্তরণটি একটু মোটা হয়ে গেলে শরীরের ভিতর প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। আর তার জেরে নানা ধরনের শারীরিক অস্বস্তি লেগে থাকে। ফ্যাটি হার্ট থাকলে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাট্যাকের আশঙ্কা বাড়ে। হৃদ্যন্ত্রের অন্যান্য রোগও হতে পারে এর ফলে।
আরও পড়ুন: Health Tips: চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ, সুস্থ থাকতে যেসব সতর্কতা অবলম্বন করবেন
ফ্যাটি হার্ট রুখতে অবশ্যই নজর দিতে হবে ক্যালরি ঝরানোর দিকে। নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস রপ্ত করুন। হিসাব করে দেখুন, শরীরচর্চা করে যত ক্যালোরি ঝরাচ্ছেন, তার চেয়ে বেশি ক্যালরি কি শরীরে ঢুকছে খাবারের মাধ্যমে ? তাহলে কিন্তু বিপদ। শরীরের ক্যালরি ইনটেক যদি অতিরিক্ত বেড়ে যায়, সে-ক্ষেত্রে হার্টের চারপাশে মেদের আস্তরণ জমতে থাকে।
এবার বুঝবেন কী করে আপনি ফ্যাটি হার্টে আক্রান্ত? উপায় হল সিটি স্ক্যান করা! কিন্তু মানুষ তো আর নিত্যদিন সিটি স্ক্যান করে দেখেন না, হার্টে ফ্যাট জমেছে কী না।যদি হার্টের কোনও সমস্যা দেখা দেয়, তখনই সিটি স্ক্যান করা হয়, এবং অনেক ক্ষেত্রেই ধরা পড়ে হার্টে ফ্যাট জমেছে! অথচ ততক্ষণে অনেকটাই দেরী হয়ে গিয়েছে। তাই আগেভাগেই সতর্ক হন। নিয়মিত শরীরচর্চা, পর্যাপ্ত ক্যালরি ইনটেক ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করুন।
আরও পড়ুন: Monkeypox: সমকামী পুরুষদের মধ্যেই ছড়াচ্ছে মাঙ্কিপক্স! বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা