ডায়াবেটিস রোগীদের অনেক ডায়েট মেনে খাবার খেতে হয়। এত নিয়ম মেনে চলার কারণ যাতে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে না যায়। এর মধ্যে, অনেকেই প্রশ্ন হল যে তাঁর যদি ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে কি তাঁর সন্তানেরও এটি হতে পারে? উত্তর হল – হ্যাঁ। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, পরিবারে কারুর ডায়াবেটিস হয়ে থাকলে সম্ভবনা অনেক বেশী থাকে। টাইপ ২ ডায়াবেটিস বিকাশে জেনেটিক্স খুব শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে।
বাচ্চাদের মধ্যে ডায়াবেটিস বাড়ছে তা প্রথম ধরা পড়ে পুণের কাছাকাছি ছটি গ্রামে। ম্যাটারনাল নিউট্রিশন স্টাডি (পিএমএনএস) রিপোর্ট বলছে, গ্রামগুলির অন্তত ৭০০ পরিবারে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে ৬ থেকে ১৮ বছর বয়সিরা ডায়াবেটিসে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। প্রি-ডায়াবেটিসের লক্ষণ স্পষ্ট পাঁচ থেকে দশ বছরের শিশুদের শরীরেও। দেখা গেছে, বাবা-মায়ের ডায়াবেটিস থাকলে বা পরিবারের কারও ডায়াবেটিস থাকলে তা পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও আসতে পারে।
শিশুদের মধ্যে মূলত চার ধরনের ডায়াবেটিস দেখা দেয়।
- সদ্যোজাতর ডায়াবেটিস- জন্মের পর থেকে ৬ মাস বয়সের মধ্যেই ধরা পড়ে নিওনেটাল ডায়াবেটিস। এই অসুখ খুবই বিরল। ৪ লাখের মধ্যে একজনের হয়। জিনগত কারণে হতে পারে এই ডায়াবেটিস।
- আর্লি অনসেট টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস- যখন অটোইমিউন রোগের (শরীরের রোগ প্রতিরোধক শক্তি যখন শরীরকেই আক্রমণ করে) কারণে শরীরে অগ্ন্যাশয়ের বিটা কোষ (যেটা ইনসুলিন সংশ্লেষণ ও নিঃসরণ করে) নষ্ট করে, ফলস্বরূপ শরীরে ইনসুলিন তৈরি হয় না। তখন সুস্থ থাকতে ইনসুলিন দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না। শিশুদের এই ডায়াবেটিসে আক্রান্তের হার এদেশে বেশি। সদ্যোজাতর টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস হয় না। ছয়মাস বয়সের পরে এটা দেখা দেয়।
- টাইপ টু ডায়াবেটিস- টাইপ টু ডায়াবেটিস শিশুদের সাধারণত পাঁচ বছর বয়সের পর ধরা পড়ে। সংখ্যা ভিত্তিতে ধরতে গেলে এই ধরনের ডায়াবেটিস শিশুদের বেশি হয়।
- এম ও ডি ওয়াই (ম্যাচুরিটি অনসেট ডায়াবেটিস অফ দি ইয়ং)- এই ডায়াবেটিসও জিনগত কারণে শিশুদের হয়। এই ডায়াবেটিসের আক্রান্তের হারও কম।
টাইপ-ওয়ান বা টাইপ টু ডায়াবেটিস একবার হলে সারাজীবনই এই অসুখ বয়ে বেড়াতে হয়। নিওনেটাল ডায়াবেটিসের একটি ধরণ হল ট্রানজিয়েন্ট ডায়াবেটিস। এই রোগে আক্রান্তদের ৫০ শতাংশ রোগীরই ৪-৫ মাসের মধ্যেই একটা সাময়িক নিরাময় হয়। কিন্তু আবার এদের ডায়াবেটিস ফিরে আসে ৫-৬ বছর বয়সে বা বয়ঃসন্ধিকালে।