মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ নিয়ে গোটা বিশ্বে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সেই সময়ই হু-এর ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রোস আধানম ঘেব্রিয়েসুস (Adhanom Ghebreyesus) সতর্ক করেছিলেন। বুধবার তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে সমকামী পুরুষদের সতর্ক হতে হবে। যৌনসঙ্গীর সংখ্যা কমান। নতুন সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্কে লিপ্ত হবেন কিনা আরেকবার ভাবুন, অচেনা যৌনসঙ্গীর সঙ্গে যোগযোগের পথ যেন খোলা থাকে, যাতে করে তাঁর সম্পর্কে খোঁজখবর করা যায়।”
গত সপ্তাহেই ইংল্যান্ডে প্রকাশিত মাঙ্কিপক্স সংক্রান্ত একটি গবেষণাপত্র বলা হয়, মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তদের ৯৮ শতাংশই সমকামী। ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে যৌন সংসর্গের মাধ্যমে রোগটি সংক্রমিত হচ্ছে। যদিও যৌনতা থেকেই যে মাঙ্কিপক্স হয়, সরাসরি এমনটা বলছেন না বিশেষজ্ঞরা। এদিকে দেশে মাঙ্কিপক্স আতঙ্ক বেড়ে চলায় এই ছোঁয়াচে রোগের টিকা তৈরিতে উদ্যোগ নিল কেন্দ্র।
ইতিমধ্যে ৭৮টি দেশে ১৮ হাজার মাঙ্কিপক্সে সংক্রমিতের হদিশ মিলেছে। সন্দেহভাজন আরও হাজার দেড়েক। এখনও অবধি মৃতের সখ্যা ৫। আক্রান্তদের অধিকাংশই ইউরোপের বাসিন্দা। ভাইরাসটি অতি সংক্রামক হওয়ায় ঝড়ের গতিতে সংক্রমণ বাড়ছে।
ভারতে এই সংক্রমণ রুখতে কড়া নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
- সংক্রমিত ব্যক্তিকে ত্রিস্তরীয় মাস্ক পরতে হবে।
- সব ক্ষত নিরাময় না হওয়া পর্যন্ত এবং ক্ষতের জায়গার শুকনো চামড়া সম্পূর্ণ রূপে ঝরে না পড়া পর্যন্ত রোগীকে নিভৃতবাসে থাকতে হবে।
- মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত কোনও ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে বা আক্রান্তের ব্যবহৃত কোনও জিনিসের সংস্পর্শে এলে ২১ দিনের নিভৃতবাসে থাকতে হবে।
- সংক্রমণ ঠেকাতে আক্রান্ত ব্যক্তিকে তাঁর ক্ষতগুলি সম্পূর্ণরূপে ঢেকে রাখার কথা বলা হয়েছে।
- যে স্বাস্থ্যকর্মী মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত থাকবেন, তাঁর শরীরে কোনও রকম উপসর্গ না আসা পর্যন্ত তাঁকে কাজ থেকে সরানো যাবে না। সেই স্বাস্থ্যকর্মীর শরীরে ২১ দিন পর্যন্ত কোনও উপসর্গ দেথা দিচ্ছে কি না, সেই দিকে নজর রাখতে হবে।
- এই সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বারে বারে ভাল করে সাবান দিয়ে হাত ধোওয়া এবং স্যানিটাইজ করার অভ্যাস চালিয়ে যেতে হবে।
- মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ বর্তমানে যে অবস্থায় রয়েছে তাকে ‘সতর্কবার্তা’ বলে আখ্যা দিলেন হু-র প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মাঙ্কি পক্স ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা আমাদের জন্য ‘সতর্কবার্তা’। কারণ, আমাদের সব সময় প্রাণঘাতী সব রোগের প্রাদুর্ভাবের জন্য প্রস্তত থাকতে হবে।’’