আবু মানহা
রাজনৈতিকভাবে যেখানে বিজেপি দুর্বল, সেখানে ‘হুকুম মেরে আকা’ বলে বিরোধী রাজনেতাদের ভয় দেখাতে নেমে পরে ইডি, সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্স নামের জিনের দল। তাদের হামলার পর হাজির হয় মিডিয়া।যেভাবে জঙ্গলে নেকড়ের শিকারের পর শকুন আসে, খানিকটা সেই কায়দাতেই।বেশিরভাই মিডিয়া আজকাল ‘বরপুত্র’ পরিচালিত।আর তা না হলেই তাদের ঘরেও হাজির হবে সেই জিনের দল।কি দরকার বাবা! গণতন্ত্র যাক মায়ের ভোগে। এই মন্ত্র নিয়ে চলছে ‘অমৃতকাল’ থুড়ি ‘রামরাজত্বের মিডিয়া’।ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীকে পাকড়াও করল ইডি। এবার কার পালা ? এবার কি তবে কেজরি ? রাম লালার মন্দির উদ্বোধেন তো উনি দাঁত বের করে সংগত করেছেন, তাহলেও কি তিনি ছাড় পাবেন না? কে যানে? গেরুয়া রঙে না রাঙলে কপালে খারাবি আছে ? কেবল গেরুয়া হলেই হবে না। হতে হবে মোদী পন্থী গেরুয়া। উদ্ধব ঠাকরেরা কি কম গেরুয়া, তবু তার ওপর কেন্দ্রের শাসক দলের হামলা কি কম হচ্ছে? বিরোধিতা করলে নিস্তার নেই।
বৃহস্পতিবার বিকেল গড়িয়ে যাওয়ার পরে জেএমএম নেতা চম্পই সোরেন আবার গেলেন রাজভবনে। সঙ্গে জেএমএম-কংগ্রেস-আরজেডি জোটের কয়েক জন বিধায়কও। রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাত করে বেরনোর সময় চম্পেই বলেন, ‘‘আমরা ৪৩ জন বিধায়ক ঐক্যবদ্ধ। আমরা রাঁচীর সরকারি গেস্ট হাউসে রয়েছি।’’ তবে ‘সরকার সমর্থক বাকি চার জন বিধায়ক কোথায়, তা নিয়ে কিছু বলেননি তিনি।জেএমএম সূত্রের খবর, ১৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও আনুষ্ঠানিক ভাবে ঝাড়খণ্ডের শাসক জোটের নতুন নেতা চম্পইকে সরকার গড়ার আমন্ত্রণ জানাননি রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণণ।
যে কাজ কেন্দ্রের শাসক দলের নেতারা করতে পারেন না, সেই কাজ তাদের হয়ে আজকাল করে দেখায় ইডি,সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্স। তাদের মতো অত কার্যকরী না হলেও বিগ্রেডের এজেন্ট হিসাবে আজকাল রাজ্যপালের ভূমিকাও কম নয়।বাংলায় একসময় বিজেপির সবথেকে স্ট্রং প্লেয়ার ছিলেন আজেকের উপরাষ্ট্রপতি ধনকর।তাঁকে রেফারি বানানো হয়েছিলেন। অথচ তিনি বাংলার বিজেপি নেতাদের পা থেকে বল কেড়ে গোল করতে চেষ্টা করতেন।মাঠে নব্বই মিনিট দৌড়েও রেফাররির পা থেকে বল কেড়ে নিতে পারতেন না বিজেপি নেতারা।
ঝাড়খণ্ডে রাজ্যপালকে হিন্দিতে চিঠিতে চম্পই লেখেন, “স্যর, ১৮ ঘণ্টা হতে চলল রাজ্যে কোনও সরকার নেই। এর ফলে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। আমরা বিধায়কেরা এবং রাজ্যের মানুষ আশা করছে যে, সাংবিধানিক প্রধান হিসাবে আপনি একটি জনমুখী সরকার গঠনের জন্য পদক্ষেপ করবেন এবং বিভ্রান্তি থেকে রাজ্যকে বের করে আনবেন।”
ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণণ বোধকরি ‘আকাশবাণী’র অপেক্ষায় রয়েছেন।কেন্দ্র থেকে শাহী বার্তার প্রত্যাশায় হয়তো বসে রয়েছেন তিনি।
এভাবেই যখন দেশ চলবে, এটাই যখন দস্তুর, তখন ‘এক দেশ এক ভোট’ অবিলম্বে চালু হওয়া উচিত।বিরোধী দলগুলোকে এবার বাতিল করে দেওয়া উচিত। আর ডবলইঞ্জিনেরই বা কী দরকার? একটাই ইঞ্জিনই যথেষ্ট। এখন থেকে জাতীয় স্লোগান হোক জয় শ্রী রাম।তিনকোনা গেরুয়া ধ্বজ উড়ুক সর্বত্র।Amendment করে লিনচিংকে বৈধতা দেওয়া হোক।গরুকে দেশের পবিত্রতম প্রাণী হিসাবে গোষণা করা হোক। বিদ্বেষও ধর্মের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ একথা বলে আইন বানানো হোক। আদানীকে দেশের সর্বকালের সেরা শিল্পপতি হিসাবে লাইফ টাইম Achivment অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হোক।প্রতিষ্ঠা করা হোক ‘গণতান্ত্রিক গেরুয়া একনায়কতন্ত্র।’ গোটা বিশ্ব আমাদের এই কনসেপ্ট নির্ঘাত কপি করবে। তাহলেই লাইফ টাইম বিশ্বগুরু হওয়া থেকে আর আমাদের আটকাতে পারবে না কেউ।