too much compassion for rahul in the eye of sonia

Opinion And Views: সোনিয়ার দুচোখ ভরা রাহুল স্নেহে, নেতৃত্ব সংকটে কংগ্রেস

বিন আনোয়ার

দেশ এগোচ্ছে গণতান্ত্রিক স্বেচ্ছাচারের দিকে। বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলি নিজের নিজের গড় আগলাতে ব্যাস্ত। প্রাচীনত্বের গরিমা ছাড়া কংগ্রেসের হাতে আর কিছু নেই।সেই ইগোটুকু ছাড়তে নারাজ কংগ্রেস। সব বাঙালি মায়ের মতো সোনিয়া গান্ধিও তাঁর সন্তান রাহুলকে শীর্ষে দেখতে চান। মায়েরা আবেগে চলে। এই আবেগ চিরন্তন । কিন্তু রাজনীতি আবেগ নির্ভর নয়। রাহুল গান্ধীকেও দেশ দেখছে বহু বছর ধরে। কিন্তু এখনও রাহুল নিজেকে সেই উচ্চতায় তুলে আনতে পারেননি, যাতে তাকে রাষ্ট্র নেতা মনে হয়।দিল্লিবাসী হলেই রাষ্ট্রনেতা হওয়া যায় না।কেবল খানদান দিয়ে সবটা হয় না। নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা আলাদা জিনিস। বৈরাম খাঁ আকবরের অভিভাবক ছিলেন কয়েক বছর। কিন্তু তরুণ আকবর অচিরেই বুঝিয়ে দেন তাঁর যোগ্যতা কতখানি। আজ বেশ কয়েক দশক ধরে রাহুল গান্ধীর লঞ্চ হওয়া আর শেষ হচ্ছে না। তিনি কবে যে সত্যিকারের নেতা হয়ে উঠবেন তা বোধকরি কেবল সোনিয়া ছাড়া আর কেউ জানে না

আনুষ্ঠানিক চিন্তন শিবির ছেড়ে সোনিয়ার উচিত কংগ্রেসকে নিয়ে সত্যিকারের ভাবনা চিন্তা করা।কংগ্রেস তা করছে না। যদি তারা তা করত তা কপিল সিব্বল সপাতে আসতেন না।দলে শৃঙ্খলা জরুরি, একই সঙ্গে জরুরি সৎ পরামর্শ। যোগ্য নেতৃত্বের গুণ হল তারা সৎ পরামর্শ বিবেচনার ক্ষমতা রাখে। সোনিয়াও একসময় মনমোহনকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে প্রমান করেছিলেন তাঁর রাজনৈতিক মেধা। গোটা দেশ যখন তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চেয়েছিল, তখন অক্লেশে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কুরসি বাড়িয়ে দিয়েছিলেন মনমোহনের দিকে। তখন সোনিয়া ছিলেন ভারতের অন্যতম প্রভাবশালী নেত্রী। কেউ কেউ সেসময় এমনটাও বলতেন যে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোয় সোনিয়া তাঁর শাশুড়িকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন: সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চিন্তাবিদ, ইবনে সিনার বিস্ময়কর জীবন অবাক করবে আপনাকে

সে সব অতীত। এখন কংগ্রেস ভুগছে নীতিসংকটে। কংগ্রেসের উচিত ছিল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে সমীকরণ বজায় রাখা। কিন্তু তারা তা পারেনি। কংগ্রেস সর্বদা তার জোটসঙ্গীর সঙ্গে সমস্যায় জড়িয়েছে।সেই ফায়দা নিয়েছে বিজেপি।যখনই মোদির তুলনা হয় রাহুলের সঙ্গে, তখন স্বাভাবিকভাবেই মোদী বেনিফিট পেয়ে যান। মোদির অতি বড় শত্রুও বলবে না যে রাহুলের রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব তাঁর থেকে বেশি।

রাহুলের উচিত স্ক্রিপ্টেড ভাষণ দেওয়া। যেমনটা মোদীজি করেন। তাতে স্বল্প সময়ে অনেকে কথা গুছিয়ে বলা যায়। আক্রমন করা যাই যুৎসই শব্দে। তা না করে রাহুল যে ভাষণ দেন, তা শুনে কেবল হায় তুলতে ইচ্ছে হয়। স্ক্রিপ্টেড ভাষণ মমতাও দেন না। আলটপকা বহু কথা বলেন তিনি। কিন্তু তা বলেন ঝাঁঝাল ভাষায়। তাঁর বডি ল্যাংগুজে একটা ফাইটিং স্পিরিট থাকে। এটা তাঁর অর্জন। কংগ্রেস থেকে এসেছেন তিনিও। প্ৰমাণ করেছেন নিজেকে। যোগ্যতমকে জায়গা ছেড়ে দিতেই হয়। কংগ্রেসে যোগ্য লোকের অভাব নেই। কিন্তু সোনিয়ার দুচোখ ভরা রাহুলে। চোখ বন্ধ করলেই বুঝি দেখতে পান প্রধানমন্ত্রী হিসাব শপথ নিচ্ছেন রাহুল। মায়ের এই আবেগ শেষ করে দিচ্ছে কংগ্রেসকে। সোনিয়া না বুঝলে আগামীতে অপেক্ষা করছে আরও বিপর্যয়।

আরও পড়ুন: মেহবুব শামসের খান: ভারত ভুলে গিয়েছে প্রথম অলিম্পিক সাঁতারুকে