মহাত্মা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী (২ অক্টোবর, ১৮৬৯ – ৩০ জানুয়ারি, ১৯৪৮) ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা এবং অহিংসা ও সত্যাগ্রহ আন্দোলনের প্রবক্তা। তিনি ভারতের জনগণের স্বাধীনতা অর্জনে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য একটি নতুন পথ দেখিয়েছেন।
গান্ধীজির প্রধান দৃষ্টিভঙ্গি ছিল অহিংসা, যেখানে তিনি বিশ্বাস করতেন যে কোনো প্রকার সহিংসতা ছাড়াই রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তন আনা সম্ভব। তাঁর এই নীতির মাধ্যমে তিনি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে একটি বৃহৎ গণআন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন, যা অহিংস প্রতিরোধের মাধ্যমে সাফল্য লাভ করে।
গান্ধীজির জীবন ছিল অত্যন্ত সরল। তিনি সব সময় আত্মনির্ভরশীলতা, সাম্য, এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের পক্ষে কথা বলেছেন। তার জীবন ও কর্মে তিনি সত্য, অহিংসা, এবং মানবতার প্রতি গভীর বিশ্বাস স্থাপন করেছিলেন।
তিনি শুধু ভারতের জন্য নয়, বিশ্ববাসীর কাছেও একটি অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন, যিনি শোষণের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে লড়াই করার একটি নতুন পথ দেখিয়েছেন।
মহাত্মা গান্ধীর কিছু প্রভাবশালী উক্তি:
1. “সত্যই ঈশ্বর, এবং ঈশ্বরই সত্য।”
গান্ধীজির বিশ্বাস ছিল যে সত্যই পরম শক্তি।
2. “অহিংসা বিশ্বের বৃহত্তম শক্তি।”
তিনি মনে করতেন অহিংসা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ হাতিয়ার।
3. “দুর্বল কখনো ক্ষমা করতে পারে না। ক্ষমা করা শক্তির লক্ষণ।”
ক্ষমার মধ্যেই আসল শক্তি নিহিত থাকে।
4. “আপনি যদি পৃথিবীকে বদলাতে চান, তাহলে প্রথমে নিজেকে বদলান।”
পরিবর্তনের জন্য আত্মউন্নয়নই প্রথম ধাপ।
5. “আমাদের কাজই আমাদের ভবিষ্যৎ গঠন করে।”
তিনি মনে করতেন মানুষের কর্মই তার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে।
6. “মৃত্যুর মতোই সত্যকে কেউ দমন করতে পারে না।”
সত্য সর্বদা প্রকাশিত হয়, কেউ তাকে চাপা দিতে পারে না।
7. “পৃথিবীতে প্রত্যেকের চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট আছে, কিন্তু লোভ মেটানোর জন্য নয়।”
পৃথিবীর সম্পদ মানুষের প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম, তবে লোভের জন্য নয়।
8. “ভয়হীনতা হলো স্বাধীনতার প্রথম শর্ত।”
গান্ধী বিশ্বাস করতেন যে প্রকৃত স্বাধীনতা ভয়হীনতার মধ্য দিয়েই আসে।
এই উক্তিগুলো মহাত্মা গান্ধীর চিন্তাভাবনা ও নীতিগুলোর গভীরতা প্রকাশ করে
এবং মানবতার প্রতি তাঁর অবিচল প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে।