খৎনা (সুন্নত) হলো ইসলামের একটি প্রথাগত রীতি, যেখানে পুরুষের লিঙ্গের অগ্রত্বক (foreskin) কেটে ফেলা হয়। এটি মুসলিমদের জন্য একটি ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা এবং সুন্নত হিসেবে পালিত হয়। এর ধর্মীয়, স্বাস্থ্যগত এবং সামাজিক নানা সুবিধা রয়েছে।
১. ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে খৎনার গুরুত্ব:
ইসলামে খৎনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি নবী ইবরাহিম (আ.) থেকে শুরু হয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়। এটি নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর সুন্নত বা রীতি হিসেবে পালিত হয়। খৎনা একটি পরিচ্ছন্নতার চর্চা এবং ধর্মীয় বিধানের অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়, যেটি একজন পুরুষ মুসলমানের দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ। মুসলিম শিশুরা সাধারণত ছোটবেলায় খৎনা সম্পন্ন করে থাকে, তবে কিছু পরিবারে এটি কিছুটা বড় বয়সেও করানো হয়।
২. স্বাস্থ্যগত দৃষ্টিকোণ থেকে খৎনার সুবিধা:
খৎনা করা পুরুষদের জন্য কিছু স্বাস্থ্যগত সুবিধা নিয়ে আসে। এগুলো হলো:
পরিচ্ছন্নতা: খৎনার ফলে লিঙ্গের অগ্রত্বক (foreskin) সরানো হয়, ফলে লিঙ্গের অগ্রভাগ পরিষ্কার রাখা সহজ হয় এবং ময়লা জমে থাকার সম্ভাবনা কমে। এতে ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকিও কমে যায়।
ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (UTI): গবেষণায় দেখা গেছে, খৎনা করা পুরুষদের মধ্যে ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশনের ঝুঁকি কম থাকে, বিশেষ করে শৈশবে।
যৌনবাহিত রোগের ঝুঁকি: কিছু গবেষণা ইঙ্গিত দিয়েছে যে, খৎনা করা পুরুষদের যৌনবাহিত রোগ (STI), যেমন এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি কিছুটা কমে। তবে এটি শুধুমাত্র খৎনার কারণে নয়, যৌন অভ্যাসের উপরও নির্ভর করে।
ফিমোসিস ও ব্যালানাইটিস প্রতিরোধ: ফিমোসিস এমন একটি অবস্থা যেখানে ফোরস্কিন পিছনে টানা যায় না, যা ব্যথা ও অস্বস্তি সৃষ্টি করে। খৎনা এই সমস্যার প্রতিরোধে সহায়ক। ব্যালানাইটিস বা লিঙ্গের অগ্রভাগের প্রদাহের ঝুঁকিও কমে।
৩. সামাজিক ও সংস্কৃতিগত দৃষ্টিকোণ:
মুসলিম সমাজে খৎনা একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে পালিত হয়। এটি পরিবারে এবং সম্প্রদায়ে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়, বিশেষ করে শিশুর খৎনার সময়। অনেক সময় এটি পারিবারিক গর্বের বিষয় হিসেবে দেখা হয়। বিভিন্ন অঞ্চলে খৎনার প্রথা ও রীতি ভিন্ন হতে পারে, তবে ইসলামী বিশ্বাসের ভিত্তিতে এটি সর্বত্র প্রচলিত।
আপনি যদি খৎনা সম্পর্কে আরও কিছু নির্দিষ্ট তথ্য জানতে চান, আমাকে জানাতে পারেন।
CircumcisionPhimosis
Phimosis