ভাদ্র মাসের অমাবস্যার বিশেষ পূণ্য তিথিতে পালিত হয় কৌশিকী অমাবস্যা। এই বিশেষ তিথিতে মা তারার আরাধনায় নিবেদিত থাকে তীর্থপীঠ তারাপীঠ। উল্লেখ্য, দশমহাবিদ্যার অন্যতম অঙ্গ হল আদ্যাশক্তি, আর সেই আদ্যাশক্তির আরাধনার ক্ষেত্রে এই তিথি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এমন তিথিতে তন্ত্রসাধনা বিশেষভাবে গুরুত্ব পায়।
কৌশিকী অমাবস্যার তিথি- ১৪ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ ২৭ ভাদ্র কৌশিকী অমাবস্যা শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার ভোর ৪ টে ৩০ মিনিট থেকে। এই তিথি থাকবে শুক্রবার ভোর ৬ টা ২৯ মিনিট পর্যন্ত। এই তিথিতে নিশিথকালে তারাপীঠে মা তারার বিশেষ আরাধনা হবে। রয়েছে ভোগের বিশেষ আয়োজন।
দিনটির পশ্চাতে যে পুরাণ কাহিনি রয়েছে, সেটাও বিষয়টি অনেকটা ব্যাখ্যা করে দেয়। একদিন দৈত্যপীড়িত দেবতারা কৈলাসে শিবের কাছে এসে তাঁদের উপর অসুরদের অত্যাচারের বিহিত চাইলেন। শিব তখন দেবতাদের রক্ষার মানসে দেবতাদের সামনেই পার্বতীকে ডেকে বলেন, ‘কালিকা, তুমিই ওঁদের উদ্ধার করো।’ দেবতার সামনে পার্বতীকে ‘কালী’ বলে ডাকায় দেবী ক্ষুব্ধ হলেন। বলা ভালো, তিনি শিবের উপর কিছুটা রেগেও উঠলেন।
আরও পড়ুন: Durga Puja 2023: রথেই খুঁটিপুজোর সঙ্গে শুরু কাউন্টডাউন, দুর্গাপুজো আর ক’দিন বাকি?
সেই ক্ষোভ থেকেই তিনি তাঁর গাত্রবর্ণ পরিবর্তনের সংকল্প করলেন। দেবী তাঁর গাত্রবর্ণ পরিবর্তনের লক্ষ্যে মানস সরোবরের ধারে কঠিন তপস্যায় বসলেন। তপস্যাশেষে মানস সরোবরের জলে স্নান করলেন। স্নানের পরে তাঁর ত্বকের সব কালো-কোষ খসে গেল। পূর্ণিমাচাঁদের মতো গাত্রবর্ণ ধারণ করলেন দেবী। তাঁর পরিত্যাগ করা কালো কোষগুলি থেকে অপূর্ব সুন্দরী কৃষ্ণবর্ণা এক দেবীর জন্ম নিলেন। সেই দেবীই কৌশিকী দেবী। যেদিন কালো দেহকোষ থেকে কৃষ্ণবর্ণা দেবীর সৃষ্টি হল, সেই দিনটিই কৌশিকী অমাবস্যা বলে খ্যাত।
কথিত আছে, এই তিথিতেই একদা দেবী শুম্ভ ও নিশুম্ভকে বধও করেন। আবার এই দিনেই দশমহাবিদ্যার অন্যতমা দেবী তারা মর্ত্যধামে আবির্ভূতা হন। এদিন তাই বীরভূমের তারাপীঠে বিশাল আড়ম্বরে মা তারার পুজো ও উৎসব হয়। তন্ত্রে কৌশিকী অমাবস্যার রাতকে ‘তারা রাত্রি’ বলা হয়৷ বলা হয়। আসলে এদিন রাতে মা তারার কৃপায় এক বিশেষ মুহূর্তে স্বর্গ ও নরক উভয়ের দরজাই কিছুক্ষণের জন্য খুলে যায়। আর সাধক বিশেষ শক্তিসাধনার মাধ্যমে তাঁর ইচ্ছেমতো সিদ্ধিলাভ করেন ও বাঞ্ছিত ধামে চলে যান।
আরও পড়ুন: Samudrik Shastra : সামুদ্রিক শাস্ত্র বলে দেয় স্তনের আকার অনুযায়ী নারীর ব্যক্তিত্ব