ইসলামী আচার-অনুষ্ঠান, (Muharram 2024) আনন্দ-উৎসবসহ সর্বক্ষেত্রে মুসলিমরা চাঁদের উপর নির্ভরশীল।মহানবী হজরত মুহম্মদ (সা.)-এর হিজরতের বছরকে ইসলামী সন গণনার প্রথম বছর ধরা হয়েছে বলে এটি হিজরি সন নামে পরিচিত। হিজরি সন চান্দ্রবর্ষ ও সৌরবর্ষ উভয় হিসেবে গণনা করা হয়।
ইসলামিক চন্দ্র ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস মহরম, দ্বিতীয় মাস সফর, তৃতীয় মাস রবিউল-আউয়াল, চতুর্থ মাস রবিউল-সানি, পঞ্চম মাস জুমাদিল -আউয়াল, ষষ্ঠ মাস জুমাদিল-সানি, সপ্তম মাস রজব, অষ্টম মাস শাবান, নবম মাস রমজান, দশম মাস শাওয়াল, একাদশ মাস জিলকদ, দ্বাদশ মাস জিলহজ্জ। সারা বিশ্বের ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা মহরম মাসের প্রথম দিনটিতে পালন করেন ইসলামি নববর্ষ।
মহরম শব্দের অর্থ সম্মানিত। ইসলামের ইতিহাসে এ মাসে কতগুলো উল্লেখযোগ্য ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, যার সম্মানার্থে এ মাসকে মহরম বা সম্মানিত বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের সুরা তাওবার ৩৬ আয়াতে এরশাদ হয়েছে- ‘আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর কাছে মাসের সংখ্যা ১২, তার মধ্যে ৪টি মাস (মহরম, রজব, জিলকদ, জিলহজ) সম্মানিত।’ হাদিস শরিফে চান্দ্রবর্ষের ১২ মাসের মধ্যে মহরমকে ‘শাহরুল্লাহ’ বা ‘আল্লাহর মাস’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। (তাফসিরে মাজহারি)।
ইসলামিক পঞ্জিকা অনুযায়ী, মহরমের দশম দিনকে আশুরা বলা হয়। এটি ইসলাম ধর্ম অনুসারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। আশুরা মূলত একটি শোকাবহ দিন। কেননা এদিন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হুসাইন ইবনে আলী নির্মমভাবে শহীদ হয়েছিলেন। এ ছাড়াও ইসলামের ইতিহাসে এ দিনটি বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ। বলা হয়, এদিন আসমান ও জমিন সৃষ্টি করা হয়েছিল। এদিন পৃথিবীর প্রথম মানুষ আদমকে (আ.) সৃষ্টি করা হয়েছিল। এ দিন আল্লাহ নবীদের স্ব স্ব শত্রুর হাত থেকে আশ্রয় দিয়েছিলেন।
এ দিন নবী মুসা (আ.)-এর শত্রু ফেরাউনকে নীল নদে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। নূহ (আ.)-এর কিস্তি ঝড়ের কবল হতে রক্ষা পেয়েছিল এবং তিনি জুডি পর্বতশৃঙ্গে নোঙর ফেলেছিলেন। এদিন দাউদ (আ.)-এর তওবা কবুল হয়েছিল। নমরূদের অগ্নিকুণ্ড থেকে ইব্রাহীম (আ.) উদ্ধার হয়েছিলেন। আইয়ুব (আ.) দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্ত ও সুস্থতা লাভ করেছিলেন। এ দিন আল্লাহ তায়ালা ঈসা (আ.) কে পৃথিবী থেকে ঊর্ধ্বাকাশে উঠিয়ে নিয়েছিলেন।