পুজোর আগে কুল খেলে পালিয়ে যায় বিদ্যা। এমন কী দেবী সরস্বতী অভিমান করেন বিদ্যার্থীদের উপর। সরস্বতী পুজোর আগে কুলে কামড় বসালেই তাদের বিদ্যা কেড়ে নেন তিনি। মুখস্ত পড়াও দেন ভুলিয়ে। শুধু তাই নয়, পরীক্ষায় লিখে আসা সঠিক উত্তরকে ভুল করে দেন তিনি। সোজা অঙ্ক কষার পর সংখ্যাও বদলে দেন নাকি! এই বিশ্বাসে বেড়ে ওঠে খুদেরা। মূলত, এই বিশ্বাস বাঙালি ছাত্রছাত্রীর মধ্যেই বেশি দেখা যায়। কিন্তু, আসল সত্য কী? কোন বৈজ্ঞানিক কারণকে দৃঢ় করার জন্য এই বিশ্বাসের প্রলেপ দেওয়া হয়?
কৃষিপ্রধান রাজ্য বাংলা। তাই যে কোনও ফসলই প্রথমে দেবতাকে উৎসর্গ করার রীতি রয়েছে। এমনকী নতুন ধান উঠলেও তা নিয়ে উৎসব পালিত হয়। শীতেরই ফল কুল। আর সরস্বতী পুজো বা বসন্তপঞ্চমীর সময়েই কুল হয়। তাই প্রথা মেনে এই ফলটিও প্রথমে দেবতাকে উৎসর্গ করা হয়।
আরও পড়ুন: আগামীকাল বছরের শেষ একাদশী, জেনে নিন সফলা একাদশীর শুভক্ষণ ও মাহাত্ম্য
আর এটাই প্রসাদ হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়। আরও একটি কারনও রয়েছে এই লোকাচারের পিছনে। বসন্ত শুরু হওয়ার সময় থেকে পেটের রোগ, জ্বর, সর্দি-কাশির প্রকোপ বাড়ে। আর এই সময়েই কুলে পাক ধরে। তার আগে কাঁচা কুল খেলে পেট খারাপের সম্ভাবনা থাকে।
শাস্ত্রে খাওয়ার বিষয়ে বহু বচনের মধ্যে একটি এই যে- ‘বার্তাকু কার্তিকে বর্জ্যং মূলং বা বদরং মাঘে। চৈত্রে শিম্বী পুনস্তুম্বী ভাদ্রে বর্জ্যং দ্বিজাতিভিঃ’। অর্থাৎ দ্বিজাতিগণ কার্তিকে বেগুন, মাঘে মুলো বা কুল, চৈত্রে শিম এবং ভাদ্রে গোলাকার লাউ খাবেন না। অতএব দ্বিজাতি ছাড়া কারও এ সব খেতে নিষেধ নেই। দ্বিজাতিরও মাঘে মুলো অথবা কুল নিষিদ্ধ, সরস্বতী পূজার আগে এ রকম কোনও কথা নেই। কারণ সরস্বতী পূজা ফাল্গুনেও হতে পারে। তবে লোকাচারে কেউ সরস্বতী পূজার আগে কুল খান না।
আরও পড়ুন: Saraswati Puja 2022 : কবে পড়েছে এবছরের সরস্বতী পুজো? জানুন দিনক্ষণ, শুভ তিথি ও মন্ত্র