হযরত আলী (আ.) (hazrat ali razi allah tala anhu)এমন একজন ব্যক্তিত্বের নাম, যার নাম শত্রুরা শত চেষ্টা করেও ইতিহাসের পাতা হতে মুছে ফেলতে পারেনি। কেননা ইসলামের প্রাথমিক যুগ হতেই তিনি ইসলামের প্রতিটি ঘটনার সাথে ওতপ্রতভাবে জড়িত ছিলেন এবং ইসলামকে তত্কালীন সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে যে অবদান তিনি রেখেছেন তা আজও মুসলমানরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।
মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (স.) এর নবুয়্যতি মিশনের শুরু দিন হতে তাঁর জীবনের অন্তিম লঘ্ন পর্যন্ত হযরত আলী (আ.) তাঁর পাশে অবস্থান করেছেন। ছোটবেলা থেকেই নবী (স.) এর সান্নিধ্যে বেড়ে ওঠা হযরত আলী (আ.) শত প্রতিকূলতার মাঝেও কখনই মহানবী (স.) কে নিঃসঙ্গ ত্যাগ করেন নি। তাঁর দুই সন্তান হাসান ও হোসেনও ইসলামের জন্য শহীদ হন(hazrat ali children)।
হিজরতের দ্বিতীয় বর্ষে হযরত (সা.) এর প্রিয় কন্যা ফাতেমা (রা.) এর সাথে আলী (রা.) এর বিয়ে সম্পন্ন হয়(how many wife of hazrat ali)। বিয়ের সময় হযরত ফাতেমা (রা.) এর বয়স ছিল ১৪ বছর এবং হযরত আলী (রা.) এর বয়স ছিল ২২ বছর। (তাবাকাতে ইবনে সা’দ, এসাবা, খোলাফায়ে রাশেদিন)। তিনি বদর, উহুদ ও খন্দক(পরিখা)-এর যুদ্ধে যোগদান এবং তাবূক ছাড়া অন্য সমস্ত অভিযানে নবীজী (সা.)-এর সঙ্গে গমন করেন। তাবূক অভিযানের সময় নবীজী (সা.) এর অনুপস্থিতিতে তাঁর পরিবার-বর্গের তত্ত্বাবধান এবং মদিনার শাসনভার তাঁর উপর ন্যস্ত ছিল। উহুদের যুদ্ধে তিনি ষোলটি আঘাতপ্রাপ্ত হন; তাঁহার প্রচণ্ড আক্রমণে খায়বারের দুর্জয় কা’মূস দূর্গের পতন ঘটে ।
যার অন্যতম প্রমাণ হচ্ছে ওহুদের যুদ্ধ। যখন সাহাবীরা নিজের জীবনের মায়ায় আল্লাহর রাসূল (স.) কে ত্যাগ করে পলায়নে ব্যস্ত তখন ইসলামের অকুতোভয় এ সৈনিক ঝাঁপিয়ে পড়ছিলেন শত্রুদের উপর। আর আহত আল্লাহর রাসূল (স.) কে রক্ষা করছিলেন তাঁর (স.) দেয়া তলোয়ার চালিয়ে ও নিজের শরীরে আঘাতের পর আঘাত গ্রহণের মাধ্যমে।
আরও পড়ুন: হযরত আলী (রাঃ) এর চিরন্তন বাণী, যা বদলে দিতে পারে আপনার জীবন
ওহুদের যুদ্ধের দিনে মহানবী (স.) এর উপর আস্থা হারানো সাহাবীরা পরবর্তীতে ইসলামের এ এ সেনাপতিকে –যিনি নুবয়্যতি জ্ঞান ও শিষ্টাচারের মাঝেই বেড়ে উঠেছেন- বিভিন্নভাবে বঞ্চিত করতে থাকে। কিন্তু এ প্রবাদের ন্যায় –যাতে বলা হয়েছে যে, ‘আতর অনাস্ত কে খুদ বেবুয়াদ, না অনকে আত্তার বেগুয়াদ’ (সুগন্ধী আতর হচ্ছে সেটা যা নিজেই সুগন্ধ ছড়ায়, ঐটা নয় যার প্রশংসা বিক্রেতা করে)- ইমাম আলী (আ.) সুগন্ধী আতরের ন্যায় নিজেই সুবাশ ছড়িয়েছেন, চাই অন্য কেউ তার প্রশংসা করুক বা না করুক।হজরত আলী সুন্নি সম্প্রদায়ের শেষ খলিফা এবং শিয়া সম্প্রদায়ের প্রথম ইমাম ছিলেন।
আলী ইবনে আবু তালিব রাঃ-কে ইবনে মুলজিম নামে একজন খারেজি ৬৬১ সালের ২৬ জানুয়ারীতে বর্তমান ইরাকে অবস্থিত কুফার শাহী মসজিদে হত্যা করে। ৪০ হিজরীর ২১ (বা ১৯) রমজান (২৮ জানুয়ারী ৬৬১ খ্রিষ্টাব্দ) এ ইবনে মুজলিম বিষাক্ত বিষে মাখা একটি তলোয়ার দিয়ে হযরত আলী রাঃ এর মাথায় আঘাত করে এবং এই আঘাতের কারণেই ঘটনার দুইদিন পর ৬২ বা ৬৩ বছরে তিনি শহীদ হন। আলীর ধৈর্য ছিল সাগর প্রমাণ। তাঁর বাণী(hazrat ali quotes) কেয়ামত পর্যন্ত মানুষকে চেতনা যোগাবে।