সৌর্ন্দয্য বাড়াতে বা শখের বশে আমরা অনেকেই খাঁচায় পাখি (Islam On Bird)পোষে থাকি। এখন প্রশ্ন বিষয়টি কি ইসলামি শরিয়তে অনুমতি দেয়?
কিছু সাহাবি খাঁচায় পাখি রেখে লালন-পালন করেছেন বলে হাদিসে এসেছে। বোখারি শরিফের ৬২০৩ নম্বর হাদিসে হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, হযরত নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে প্রিয় ছিল আমার এক ভাই, তার নাম আবু উমায়ের। আমার মনে আছে, সে যখন এমন শিশু যে মায়ের বুকের দুধ ছেড়েছে মাত্র। রাসূলুল্লাহ (সা.) তার কাছে আসতেন এবং বলতেন, হে আবু উমায়ের! কি করেছে তোমার নুগায়ের? নুগায়ের হলো- এমন একটি ছোট পাখি, যার সঙ্গে আবু উমায়ের খেলা করতো। নুগায়ের মারা গিয়েছিলো। নবী করিম (সা.) তাকে নুগায়েরের জন্য চিন্তিত দেখলেন এবং তার সঙ্গে খেলা করলেন।
এছাড়া বুখারি শরিফের ২৩৬৩ নম্বর হাদিসে আছে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, সাহাবায়ে কেরাম হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কে জিজ্ঞাসা করেন, হে আল্লাহর রাসূল! জীবজন্তুর জন্যও কি আমাদের পুরস্কার আছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ; প্রত্যেক দয়ালু হৃদয়ের অধিকারীদের জন্য পুরস্কার আছে।
আমরা আল কুরআনে দেখতে পাই সুলায়মান আলাইহিস সালাম-এর পোষা পাখি ছিল। যার নাম ছিল হুদহুদ। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে- ‘সুলায়মান পক্ষীকুলের খোঁজ-খবর নিল। অতঃপর বলল, কি হ’ল হুদহুদকে দেখছি না যে? না-কি সে অনুপস্থিত’ (নমল ২০)
আরও পড়ুন: Eid Milad-Un-Nabi 2022: নবী মুহাম্মদ সা. সম্পর্কে বিশ্বের বিখ্যাত মানুষদের কিছু উক্তি
আর বিখ্যাত সাহাবী আব্দুর রহমান ইবনু সা’খর-কে রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিড়ালের ছানা পালার কারণে আবু হুরাইরা নামকরণ করেছেন। যার মানে বিড়াল ছানার বাপ।
ইসলামী শরীয়তে খাঁচা বা বদ্ধ জায়গায় পাখি ও পশু পালনে কোনরূপ নিষেধাজ্ঞা পাওয়া যায় না অর্থাৎ একে হারাম বা নিষিদ্ধ করা হয়নি। আবার উৎসাহিতও করা হয়নি। অর্থাৎ এটা মুবাহ্ (সওয়াবও নেই, গুনাহও নেই)। তবে যদি কেউ কোন পাখি বা পশু শখ করে পুষতে চায় তবে ইসলাম তার শর্তসাপেক্ষে অনুমোদন দিয়েছে। আর সে শর্ত হচ্ছে- পোষা পাখি ও পশুর প্রতি যত্নবান হতে হবে, তাদেরকে উপযোগী বাসস্থান দিতে হবে, পর্যাপ্ত পানি ও খাদ্য প্রদান করতে হবে, অবস্থান অনুযায়ী সম্মান করতে হবে, ভালোবাসতে হবে এবং অসুস্থ্য ও রোগাক্রান্ত হলে চিকিৎসা করাতে হবে। যদি পালকের অযত্ন ও অবহেলার কারণে পোষা পাখি ও পশুর কোনরূপ কষ্ট হয় বা তারা মৃত্যুবরণ করে তবে তাকে নিশ্চিত মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ’র নিকট কঠিন জবাবদিহীর সম্মুখীন হতে হবে।
আবদুল্লাহ (সা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন এক নারীকে একটি বিড়ালের জন্য আজাব দেওয়া হয়েছে এ জন্য যে সে বিড়ালটিকে আটকে রাখায় সেটি মারা গিয়েছিল। ফলে সে জাহান্নামে গেছে। সে বিড়ালটিকে বেঁধে রেখেছিল কিন্তু নিজেও তাকে খাবার পানীয় দেয়নি আবার ছেড়েও দেয়নি যে সে জমিনের পোকামাকড় খেয়ে বাঁচতে পারে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫৭৪৫)
আরও পড়ুন: Ibadat: ইবাদত কবুল হচ্ছে কি না, বুঝবেন কী করে? জেনে নিন উপায়