আজ ১০ মহররম, পবিত্র আশুরা। আরবি ‘আশারা’ শব্দের অর্থ দশ। আর আশুরা মানে দশম। হিজরি ৬১ সনের এই দিনে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা কারবালার ময়দানে ইয়াজিদের বাহিনীর হাতে শহীদ হন। এ জন্য শোকাবহ এবং ঘটনাবহুল এই দিন মুসলমানদের কাছে ধর্মীয়ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এ ছাড়া সৃষ্টির শুরু থেকে মহররমের ১০ তারিখ তথা আশুরার দিনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এ জন্য আশুরার মর্যাদা ও মাহাত্ম্য উত্তরোত্তর বাড়ছে।
হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের মহান আদর্শকে সমুন্নত রাখতে হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে আছে। কারবালার এই শোকাবহ ঘটনা ও পবিত্র আশুরার শাশ্বত বাণী সবাইকে অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং সত্য ও সুন্দরের পথে চলতে প্রেরণা জোগায়।আল্লাহর রহমত ও ক্ষমার আশায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা নফল রোজা, নামাজ, দান-খয়রাত, জিকির-আজকারের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করবেন।
আরও পড়ুন: Hajj 2022: আবেগতাড়িত হয়ে হজযাত্রীরা যে ভুলগুলো করেন
মুসলিম বিশ্বের আন্তর্জাতিক শোক দিবস শোহাদায়ে কারবালা দিবস। ‘কারবালা’ আজও ঘটে চলেছে দেশে দেশে, দুনিয়ার সব নদী ‘ফোরাত’-এর কান্না হয়ে বয়ে চলেছে। ‘কুফা’ যেন কুফা হয়ে সিন্দাবাদের ভূতের মতো চেপে বসেছে মানবসভ্যতার ঘাড়ে মানবাধিকারবঞ্চিত প্রতিটি জনপদে। কারবালার শিক্ষা হলো সর্বজনীন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য প্রয়োজন নবীপ্রেম, আহলে বাইতের প্রতি ভালোবাসা, ধর্মনিষ্ঠা, আত্মত্যাগ, দায়িত্ববোধ ও কর্তব্য পালন, মানুষের কল্যাণে জীবন উৎসর্গ করা। ভোগে নয়, ত্যাগেই সুখের সন্ধান করা। জুলুম ও অন্যায়ের কাছে মাথানত না করা, সব সময় আল্লাহর ওপর সম্পূর্ণ ভরসা রাখা। প্রতিটি মহররম, প্রতিটি আশুরা ও শোহাদায়ে কারবালা দিবস আমাদের ত্যাগের শিক্ষা দেয়, আত্মমর্যাদাবোধ জাগ্রত করে। ভয়কে জয় করে, নিজের জীবন উৎসর্গ করে মুক্তির পথ তৈরি করাই কারবালার মূল শিক্ষা।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘উত্তম জিহাদ হলো জালিম শাসকের সামনে সত্য কথা বলা।’ (তিরমিজি, আবুদাউদ ও ইবনে মাজাহ)
আরও পড়ুন: সর্বোত্তম সম্পদ ঈমানের উপর অটল থাকার আমল ও দোয়া