মহাকাশে আটকে পড়া নভোচর সুনীতা উইলিয়মস ও তাঁর সঙ্গীর পৃথিবীতে ফেরা আরও অনিশ্চিত। এখনই তাঁদের ফেরানো সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছেন নাসার সাম্প্রতিক তথ্য। জুলাইয়ের শুরুতেই তাঁদের ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরুর কথা ছিল। কিন্তু মহাকাশ স্টেশনের আশেপাশের পরিস্থিতি এমনই জটিল যে মহাশূন্যে বেরনো মানেই বিপদ। কিন্তু কতদিন তাঁরা আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে আটকে থাকবেন? এর কোনও নির্দিষ্ট উত্তর মেলেনি এখনও।
নাসার ‘মিশন স্টারলাইনার’ নিয়ে গত ৫ জুন মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন দুই মহাকাশচারী সুনীতা এবং বুচ।এর আগে কথা ছিল ১৪ জুন ফিরে আসার। তারপর শোনা গিয়েছিল ২৬ জুন ফিরবেন। কিন্তু, দুবারই বাতিল হয়েছে প্রত্যাবর্তন।
এই প্রথম স্টারলাইনার মহাকাশচারী নিয়ে পাড়ি দিল মহাকাশে। তবে মহাকাশে সুনীতাদের পৌঁছনোটাই শুধু এই ‘মিশন’-এর লক্ষ্য ছিল না। মহাকাশ স্টেশনে আরও কাজ ছিল সুনীতাদের। সেই সব কাজ নিয়ম মেনে চলছিলও। কিন্তু হঠাৎ পরিস্থিতি বদলে যায় একটি দুর্ঘটনায়।
দিন কয়েক আগে ‘রিসার্স’ নামে রাশিয়ার একটি কৃত্রিম উপগ্রহ বিস্ফোরণ হয় আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের কাছেই। তার পরেই উপগ্রহের শয়ে শয়ে ভাঙা টুকরো ছড়িয়ে পড়েছে মহাকাশ স্টেশনের চারপাশে। তাতে মহাকাশ স্টেশনের বাসিন্দা সুনীতাদের কোনও ভয় না থাকলেও তাঁরা স্টেশনের বাইরে বেরিয়ে ‘মিশন’-এর কাজ করতে পারছেন না। এই ধরনের ‘মিশনে’ মহাকাশচারীদের অনেক সময়েই মহাকাশ স্টেশনের বাইরে বেরিয়ে কোনও যন্ত্রাংশ ঠিক করা এবং নানা রকম পরীক্ষানিরীক্ষা করার পরিকল্পনা থাকে।
এই ধরনের অভিযানকে এক কথায় বলা হয় ‘স্পেস ওয়াক’। ঘটনাটি যে দিন ঘটে, সে দিন সুনীতাদেরও ‘স্পেস ওয়াক’ করার কথা ছিল। কিন্তু দুর্ঘটনাটি ঘটার পরে ঝুঁকি এড়াতে তড়িঘড়ি মহাকাশ স্টেশনে আশ্রয় নিতে হয় তাঁদের। তার পর থেকে আর ওই ধরনের কোনও অভিযানেই বেরোতে পারেননি তাঁরা। শুধু তা-ই নয়, সুনীতাদের ফেরার পথেও তৈরি হয়েছে নানা বিপদ। এই পরিস্থিতিতেই সুনীতাদের ঘরে ফেরা মুলতবি করেছে নাসা।
নাসা এবং মিশনের অন্যতম উদ্যোক্তা বোয়িং স্টারলাইনার উভয়েই হিলিয়াম লিকের কথা জানত বলে নাসার (NASA) রিপোর্টে উল্লেখ। ত্রুটিযুক্ত যানে কেন তাঁদের পাঠানো হয়, সেই প্রশ্ন ওঠে সংশ্লিষ্ট মহলে। এর জন্য সমালোচিতও হয় ওই সংস্থা।