মাত্র ৪৬ বছর বয়সে গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস। পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রাত ১১টা নাগাদ সাইমন্ডসের গাড়ি অ্যালিস রিভার ব্রিজ থেকে বাঁদিকে যাওয়ার সময় উল্টে যায়। ক্রিকেট জীবনে যে ভাবে বার বার সবাইকে চমকে দিয়েছেন, ঠিক তেমনই সাইমন্ডসের মৃত্যুও হল হঠাৎ করে। কারও কিছু বুঝে ওঠার আগেই চলে গেলেন। ক্রিকেট কেরিয়ারে বিতর্ক কখনও পিছু ছাড়েনি তাঁর।
১৯৯৮ সালের ১০ নভেম্বর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এক দিনের ক্রিকেটে অভিষেক হয় সাইমন্ডসের। টেস্টে অবশ্য সুযোগ পান অনেক পরে। ২০০৪ সালের ৮ মার্চ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেক হয় তাঁর। ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টি২০ ক্রিকেটেও অভিষেক হয় সাইমন্ডসের। ১৯৮টি এক দিনের ম্যাচে ৫০৮৮ রান করেছেন সাইমন্ডস। রয়েছে ছ’টি শতরান। টেস্ট অবশ্য অনেক কম খেলেছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২৬টি টেস্টে দু’টি শতরান-সহ ১৪৬২ রান করেছেন তিনি। জাতীয় দলে তাঁকে আদর করে ‘রয়’ নামে ডাকা হত। বল হাতেও সমান দক্ষ ছিলেন সাইমন্ডস। এক দিনের ক্রিকেটে ১৩৩ ও টেস্টে ২৪টি উইকেট নিয়েছেন তিনি।
ক্রিকেট জীবনে সাফল্যের সঙ্গে বার বার বিতর্ক সঙ্গী হয়েছে সাইমন্ডসের। তার মধ্যে অন্যতম ‘মাঙ্কি গেট’ বিতর্ক। যেখানে ভারতীয় স্পিনার হরভজন সিংহের সঙ্গে গণ্ডগোলে জড়িয়ে পড়েন সাইমন্ডস।
আরও পড়ুন: ঋদ্ধিমান সাহাকে হুমকির জের, বোরিয়া মজুমদারকে ২ বছরের জন্য ব্যান করল BCCI
ভারতীয় দল ২০০৭-০৮ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে গেলে এই বিতর্ক হয়েছিল। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট সিডনিতে খেলা হয়েছিল। ম্যাচ চলাকালীন হরভজন সিং এবং অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের মধ্যে একটি বাক যুদ্ধ হয়। যার পরে রিকি পন্টিং ম্যাচ কর্মকর্তাদের কাছে সাইমন্ডসকে নিয়ে হরভজন সিংয়ের বর্ণবাদী মন্তব্যের অভিযোগ করেন। পন্টিং বলেছিলেন যে হরভজন সিং নাকি অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসকে বানর বলেছিলেন।
এই ঘটনা শোনার পর হরভজন সিংকে কিছু ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরে টিম ইন্ডিয়া তার অফ স্পিনারের পাশে দাঁড়িয়েছিল। সে সময় ভারত সফর বাতিলের হুমকিও দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত হরভজন সিংয়ের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয় এবং তাকে ম্যাচ ফি জরিমানা করা হয়।
সে বছর ভারত সফরে অস্ট্রেলিয়া দলে নেওয়া হয়নি সাইমন্ডসকে। বছরের শেষ দিকে একটি পাবে গিয়ে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন। পরের বছর নিউজিল্যান্ডের তৎকালীন ক্রিকেটার ব্রেন্ডন ম্যাকালামের উদ্দেশে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। ২০০৯-এ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলাকালীন মদ্যপান সংক্রান্ত একটি ঘটনায় তাঁকে দেশে ফেরানো হয়। সাইমন্ডসের জীবন থেকে শৃঙ্খলা জিনিসটাই ক্রমশ হারিয়ে যেতে থাকে। আর কয়েক বছর কোনও মতে টানার পর ২০১২ সালে পাকাপাকি ভাবে অবসর নিয়ে নেন সাইমন্ডস।
আরও পড়ুন: Thomas Cup Badminton: সৃষ্টি হল ইতিহাস, ৭৩ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার ‘বিশ্বকাপ’ জয় ভারতের