আর্জেন্টিনা – ২( মলিনা, মেসি) (FIFA World Cup 2022)
নেদারল্যান্ড – ২( ওয়েজহরস্ট)
টাইব্রেকারে ৪-৩ জয়ী আর্জেন্টিনা
কাতারের (Qatar) মাটিতে আর্জেন্টিনার স্বপ্নের দৌড় অব্যাহত। নীল-সাদা ব্রিগেডের এই স্বপ্নের কারিগর লিও মেসি (Leo Messi) এবং এমি মার্টিনেজ। মেসি গোল করালেন, নিজে করলেনও। আর মার্টিনেজ পেনাল্টি শুট আউটে জোড়া সেভ করে জিতিয়ে দিলেন নিজের দেশকে। দুই তারকার রূপকথার পারফরম্যান্সে ব্রাজিলের বিদায়ের দিনই সেমিফাইনালে চলে গেল আর্জেন্টিনা (Argentina)।
নেদারল্যান্ডস বধের চিত্রনাট্য লিখতে মরিয়া ছিলেন মেসিও। এদিন ছিল মেসির বিশ্বকাপে ২৪ তম ম্যাচ। ম্যাচের শুরু থেকে দুই দল সমানে সমানে লড়াই করছিল। যদিও পাস খেলার বিচারে কিছুটা এগিয়েছিল আর্জেন্টিনা। গোটা প্রথমার্ধ ভ্যান গলের নেদারল্যান্ডসের (Netherlands) রক্ষণভাগ শুধুই মেসিকে আটকানোর চেষ্টা করে গেল। আর আর্জেন্টিনা চেষ্টা করে গেল মেসির মার্কারদের ছেড়ে আসা ফাঁকফোকর দিয়ে ডাচ জালে বল জড়ানোর। কিন্তু সেই সুযোগ করে উঠতে পারছিলেন না ডি পল বা অ্যাকুনারা। যতক্ষণ না ম্যাচের ৩৫ মিনিটে মেসি নামক ওই নক্ষত্রের পা থেকে বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা পাসটি বেরিয়ে এল। তিন জন ডিফেন্ডারের ঘেরটোপের মাঝখান থেকে আরও দুই ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে লিও সতীর্থ মলিনার পায়ে যখন বলটি সাজিয়ে দিলেন, তখন তাঁর সামনে শুধু প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক। আর্জেন্টিনার ওই তরুণ তুর্কি ডাচ গোলরক্ষককে ধরাশায়ী করে জালে বল জড়িয়ে দিতে ভুল করলেন না। সেই সঙ্গেই বিশ্বকাপ (FIFA World Cup) ফুটবলে নিজের সপ্তম অ্যাসিস্টটি পেয়ে গেলেন লিও। বিশ্বকাপে তাঁর থেকে বেশি অ্যাসিস্ট রয়েছে আর একজনের। তিনি দিয়েগো মারাদোনা।
বিপক্ষের জালে বল জড়ানোর সুযোগ মেসি পেলেন ম্যাচের ৭৩ মিনিটে। যখন পেনাল্টি বক্সের মধ্যে অ্যাকুনাকে ফাউল করে বসলেন ডাচ ডিফেন্ডার ডামফ্রিস। বিশ্বকাপে নিজের শেষ পেনাল্টিটি মিস করেছিলেন মেসি। কিন্তু এদিন আর স্পট কিক থেকে ভুল করলেন না তিনি। বল জড়িয়ে দিলেন ডাচদের জালে। বিশ্বকাপে এটি মেসির দশম গোল। মারাদোনাকে টপকে গিয়েছেন তিনি।
🇦🇷❤️ Another game closer…
— FIFA World Cup (@FIFAWorldCup) December 9, 2022
আরও পড়ুন: pele: চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন না ফুটবল সম্রাট, জবাব দিয়ে দিলেন চিকিৎসকরা
দু’গোলে পিছিয়ে পড়ার পরও হার মানতে রাজি ছিল না ইউরোপীয় ফুটবলের অন্যতম শক্তি নেদারল্যান্ডস। গোল শোধ করতে নিজেদের সর্বশক্তি দিয়ে আক্রমণে নেমে পড়ে ডাচরা। একের পর এক আক্রমণে আর্জেন্টিনার রক্ষণকে তছনছ করে দেয় তারা। সাফল্য আসে মিনিট দশেকের মধ্যেই। ৮৩ মিনিটে ওয়েগহ্রস্টের গোলে ব্যবধান কমিয়ে ফেলে নেদারল্যান্ডস। ম্যাচের শেষদিকে গোল শোধ করার জন্য আরও মরিয়া ভুমিকায় দেখা যায় ডাচদের। খেলা থেকে কার্যত হারিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। মাঠের মধ্যে সৃষ্টি হয় বিশৃঙ্খলারও। একের পর এক হলুদ কার্ড দেখাতে থাকেন রেফারি। গোটা ম্যাচে তিনি মোট ১৬টি হলুদ কার্ড দেখিয়েছেন। কার্যত গোটা ম্যাচেই প্রশ্নের মুখে পড়ে জঘন্য রেফারিং। সেই বিশৃঙ্খলার জেরে ১০ মিনিটের ইনজুরি টাইম দেওয়া হয়। আর তাতেই বিপত্তি আর্জেন্টিনার। ইনজুরি টাইমের দশম মিনিটে এসে অনবদ্য বুদ্ধিদীপ্ত ফ্রি-কিক থেকে গোল শোধ করে দেয় নেদারল্যান্ডস। ডি বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রি-কিকটি পায় নেদারল্যান্ড। সেই ফ্রি-কিক থেকে সরাসরি গোলে শট না নিয়ে বুদ্ধিদীপ্তভাবে বল বক্সের ভিতর বাড়িয়ে দেয় ডাচরা। সেই বাড়ানো বল থেকেই গোল পায় নেদারল্যান্ডস। খেলা শেষের বাঁশি পড়ার কয়েক মিনিট আগে সমতায় চলে আসে দুই দল। ফলে খেলা গড়ায় এক্সট্রা টাইমে।
টাইব্রেকারে দলের রক্ষাকর্তা হয়ে দাঁড়ালেন মার্তিনেস। নেদারল্যান্ডসের প্রথম দু’টি শট বাঁচিয়ে দেন তিনি। আর্জেন্টিনার হয়ে চার নম্বর পেনাল্টি নিতে যান ফের্নান্দেস। বাইরে মারেন তিনি। ফলে আবার হৃদস্পন্দন বেড়ে যায় আর্জেন্টিনার সমর্থকদের। কিন্তু শেষ পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে জিতিয়ে দেন লাউতারো মার্তিনেস। সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ ক্রোয়েশিয়া।
আরও পড়ুন: FIFA World Cup Qatar 2022 : ব্রা পরে বিশ্বকাপ খেলছেন পুরুষ ফুটবলাররা! কেন?